সৃষ্টের সর্ব্ব শ্রেষ্ঠ গুণ যাহা প্রেম জননী। প্রেমময়ের প্রেমরাজ্যে যত কিছু গুণ আছে, তন্মধ্যে প্রেম সর্ব্বাপেক্ষা প্রধান। প্রেমের অঙ্কুর ভালবাসা অথবা ভালবাসার উন্নত পরিণতিকে প্রেম কহে অর্থাৎ অপরকে আত্মায় সংলগ্ন করাকে গেম কহে। যে গুণ সদা সতেজ, চির উজ্জীবিত, সদা আনন্দ দায়ক, কেবল অভীষ্টকে পাইবার জন্য প্রবর্তিত করে, তাহাকে প্রেম কহে। যে গুণ থাকিলে ঐ গুণের ভাজনকে পাইলে প্রাণ শীতল হয়, আত্মা তৃপ্ত হয়, মনে অভিনব আনন্দরসময় ভাবের উদয় হয়, হৃদয় নবভাবে প্রবৃত্ত হয়, ও পরমাত্মার প্রকৃত উপাসনা হয়; হৃদয় সরস হয়, মন ভাবে পূর্ণ হয়, জীবাত্মার অনন্ত আনন্দ হইতে থাকে, অনন্ত ভাবে পাইবার আকর্ষণ হয়। মূল কথা প্রেমে পরম গুণের ভাজনের গুণই লক্ষ্য হয়, সদা প্রেম দেখিতে বাসনা হয়, কথা শুনিলে প্রাণ জুড়ায়, প্রকৃত শান্তি হয়, ঐ গুণের প্রকৃত ভাজনের চিহ্নমাত্র পাইলে প্রাণ সঞ্চার হয়, তাহাকে প্রেম কহে। প্রেমে সকল গুণের গুণত্ব (সংস্কার) হয়, এজন্য প্রেম গুণের গুরু বলা হয়। প্রেমসাধনাতেই আত্মার উন্নতি হয়। প্রেম সাধনা সর্ব্বপ্রথমে আরম্ভ হইলেও সর্ব্বভাবেই চলিতে থাকে, সুতরাং ইহা অসীম কাল সাধনের ধন। সর্ব্ব ভূমন্ডলের সকল লোকের হৃদয়েই প্রেম আছে, (বা প্রেমাঙ্কুর আছে) সকলেই উহার জন্য পাগল, সকলেই ঐ ধনে আকর্ষিত। ঐ সুধাময় রসের স্বাদ পাইলে সদা আকর্ষিত হতেই থাকে, প্রেম অরূপ রূপে আছে, প্রেম অনন্তময়, তাহার প্রকৃত অরূপ গুণে সদা দৃশ্যমান। এ সংসারে সুখের চন্দ্র প্রেম, ভালবাসা জীবনের বন্ধন, জীবন উহাতেই উৎপন্ন, উহাতেই স্থিত এবং উহাতেই অনন্ত প্রাপ্তি হয়। প্রেমসুধায় অনন্ত শান্তি ও বর্দ্ধনশীল, সুখে সুখ-বর্দ্ধক, যৌবনে বৃদ্ধত্ব ও বার্দ্ধক্যে তারুণ্য সম্পাদক এবং জীবনের চিরসম্বল। এই অসীম গুণের বর্ণন, অসীম ভাবে চলিতে থাকে। কোন মহাত্মা এ বিষয়ে যাহা বলিয়াছেন তাহা এই-ভালবাসাকে প্রেম কহে। যে সৃষ্ট আত্মার দর্শন আমার নিকট সততই চারু ও মনোহর, যাহাকে নিয়ত দেখিলে অনন্ত দৃষ্টি তৃপ্ত বোধ করে, যাহার কথা চিরমধুময়, অমৃতময় ও কর্ণকুহরে প্রবেশ করিবা মাত্রেই হৃদয় নাচিতে থাকে, বদনে যাহার গুণব্যখ্যা অবিরাম ধারায় চলিতে থাকে, হৃদয় যাহাকে হৃদয়স্থ করিয়াও সুখের অসীম ভাব প্রাপ্ত হইতে থাকে, যাহার শুধু গুণ লক্ষ্য হয়, সদা দেখে আনন্দ হয়। যাহার মঙ্গল চায়, হৃদয়ে সদা মঙ্গল স্থান পায়, আমার বলিয়া অঙ্গীকার করি, জীবন সর্ব্বস্ব সমর্পণ করিয়াও যাহার কিঞ্চিৎ সাহায্য করিতে পারিলে, হৃদয় কৃতার্থ বোধ করে, আবার যাহার দর্শনে কেমন হইয়া পড়ি, কেবল পুতুলের মত হইয়া পড়ি ইত্যাদি ইত্যাদি, তাহাকেই আমি ভালবাসি, তাহাকেই আমি প্রেম করি ও এরূপ ভালবাসাকেই প্রেম কহে।
---ঈশ্বর বিশ্বময়ি।
0 মন্তব্যসমূহ