আমাদের তিনপ্রকার রোগ ব্যাধি থাকে যথা মানসিক, শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক। সত্যধর্ম্মের নিয়ম অনুসারে মানসিক রোগের দায়ভার আমাদের নিজেদের । শারীরিক রোগের জন্য ডাক্তার এবং আধ্যাত্মিক ব্যাধির জন্য গুরু হওয়ার উপযুক্ত গুণাবলী সম্পন্ন গুরুর প্রয়োজন। সত্যধর্ম্মে যিনি আদিষ্ট হন তাকে ব্রহ্মদর্শন করতেই হয়। এছাড়াও গুণের অনুশীলন দ্বারা বহু প্রকার সিদ্ধি অর্জন করতে হয়। যিনি গুরু হবেন তার সমস্ত সিদ্ধি সত্য কিনা তা যুক্তি প্রমাণ অনুসারে গ্রহণ করার নিয়মও সত্যধর্ম্মে লিখিত আছে। গুরু হওয়ার উপযুক্ত গুণাবলীর মধ্যে পাপগ্রহন ক্ষমতা,আয়ু প্রদান শক্তি এবং রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারার ক্ষমতাও থাকে। এই আধ্যাত্মিক শক্তির প্রভাবে গুরু শিষ্যকে সকল প্রকার বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারেন। এমনকি কোন বিপদের আশঙ্কা থাকলে সেটা আগে থেকে জানাতে পারেন। পরমেশ্বর মঙ্গলময়, তিনি যে মঙ্গলময় এই জ্ঞান দ্বারা যদি সমস্ত বিষয় বিবেচনা করা হয় তাহলে দেখব যে যা কিছু ঘটে তা সবই আমাদের মঙ্গলের জন্য। সবই আমাদের আত্মোন্নতির সহায়ক। আপাত দৃষ্টিতে যেটা অমঙ্গল মনে হয়, নিষ্ঠা সহকারে গুরু বাক্য পালন করার পর আমরা সেই কাজের মঙ্গল দেখতে পারি। তারমধ্যে বেশিরভাগ বিষয় গুরু আগে থেকেই জানিয়ে দিতে পারেন। গুরু কে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হতে হয় কারন শিষ্য জন্ম জন্ম ধরে যে পাপ করে সেই পাপের বোঝা গ্রহন করে দীক্ষা রূপ পরম জন্ম দান করেন।পাপ থেকে মুক্ত করাই দীক্ষার উদ্দেশ্য। এই দীক্ষিত জীবনে পিতা গুরু, মাতা বাহ্য জগতের অভিজ্ঞতা, শোনিত বিশ্বের মনোহর ভাব,গর্ভ প্রেমময়ের অঙ্কদেশ। সত্যধর্ম্মের নিয়ম অনুসারে গুরুর চরণে নিজের খারাপ অভ্যাস দিতে পারাই শিষ্যের কর্ত্তব্য । এই কর্ত্তব্য পালনেই আমরা মুক্তি পেতে পারি।
জন্মসূত্রে আমরা পাশবদ্ধ পশু এটা মানতে না পারা মানসিক রোগ। এই সত্য মানতে না পারার ফলে যে আচরণ হতে থাকে সে সবই মানসিক রোগের ফলে হয়।কায়ে মনে বাক্যে যারা সত্যকে অবলম্বন করতে পারে না অর্থাৎ সৎভাবে জীবন যাপন করতে চায় না বুঝে নিতে হবে তারা মানসিক ব্যাধির স্বীকার। তারা কোন একটি বিষয়কে মনে ভাবে একরকম, বলে আরেকরকম আর কাজে করে অন্যরকম। সত্যধর্ম্মে গুণের অনুশীলন দ্বারা এই মানসিক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে।এই পদ্ধতি অনুসারে ওই তিন প্রকার রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বিভিন্ন শারীরিক রোগ এই মানসিক রোগের থেকে তৈরি হয়। এবং কিছু রোগ আমরা জীনগত ভাবে রক্তের মাধ্যমে নিয়ে জন্মগ্রহণ করি। এছাড়াও নিজেদের কর্মফলে বিভিন্ন রোগ তৈরি হয়। যেগুলো আবার পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে জীনগত ভাবে থেকে যায়। আমরা যে কাম,ক্রোধ,লোভ,মদ, মাৎসর্য্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করি এই বৈশিষ্ট্যগুলোর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এর ফলেই আমাদের তিন প্রকার রোগ হয়। মানসিক রোগ থেকে মুক্তি না পেলে অন্য দুই প্রকার রোগ থেকে মুক্ত হওয়া যায় না। কারন আমাদের মনের ওপর আমাদের ইচ্ছাশক্তি নির্ভর করে। সৃষ্টিকর্ত্তা আমাদের প্রত্যেককেই ব্যাক্তি স্বাধীনতা দিয়েছেন।আমরা গুণী হতে চেষ্টা করব না কি অন্যায় করতে থাকব তার দায় আমাদের এই ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর। ধর্ম্ম বিজ্ঞানসম্মত হতেই হবে। এতদিন হয়নি বলেই সমগ্র পৃথিবীতে ধর্ম্মের নামে মিথ্যাচার চলছে। সত্যধর্ম্ম বিজ্ঞানসম্মত, তাই এই সত্যকে অবলম্বন করে মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য সকলকে আন্তরিক ভাবে আহ্বান করছি
0 মন্তব্যসমূহ