সত্যধর্ম্ম ব্যোমে শুন প্রণব সুরব।





 তত্ত্বজ্ঞান সঙ্গীতে ঈশ্বর গুরুনাথ এঁর লেখা সত্য ধর্ম্মের শ্রেষ্ঠতাসূচক সঙ্গীত"সত্য ধর্ম্মে ব্যোমে শুন প্রণব সুরব"।এখানে সত্যধর্ম্ম ব্যোম বলতে পরমপিতার প্রতিটি গুণ তাঁর বৈশিষ্ট্য স্বরূপ পঞ্চভূত যার দ্বারা এই সৃষ্টিমন্ডল দৃশ্যমান হয়। আবার এই সৃষ্টিতে প্রথম সৃষ্টি ব্যোমের।যেমন মাটি জল থেকে সৃষ্টি হয়েছে।জলের সৃষ্টি কি থেকে? আগুন থেকে জলের সৃষ্টি।জল যখন বরফ হয় তাতে আরো চাপ দিলে পাথর হয়ে যায়। পাথরে আরো বেশি চাপ দিলে তা মাটিতে পরিণত হয়।তার আগের প্রক্রিয়া আগুন যা তৈরি হয় বায়ু থেকে।বায়ু আবার তৈরি হয়েছে ব্যোম থেকে।এই চারিটি একত্রিত হয়ে এই সৃষ্টিমন্ডল যা আমাদের ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য হয়।
সত্যধর্ম্ম আবিষ্কার হল তার ভেতরে সত্য কিভাবে আছে! কত তার ব্যাপ্তি!তার ভেতরে প্রণব ধ্বনিত হয়। সত্যধর্ম্মের যে সূত্রগুলো আছে তার মূল কিন্তু প্রণব।সেই সত্যকে তুমি ধারন যখন করবে প্রকৃত প্রণবের উচ্চারণ তুমি গুরুর কাছে জেনে নিতে পারবে। বীজমন্ত্র যে গভীর থেকে গভীরতর ভাবে হৃদয়স্ত করতে পেরেছে সে চিরদিন গুরুর কাছে থাকতে পারবে, তাঁর সান্নিধ্য লাভ করবে,এটাই নিয়ম।

সত্যের ধ্বনি এমনভাবে ধ্বনিত হয় তার শক্তির কাছে দেবতা দানব সবাই নত।তাঁর গুণের কাছে শান্ত।পৃথিবীতে মিথ্যার যত রব কলরব বা যতপ্রকার ভীমরব সবের উৎস প্রণব সুরব।এই সৃষ্ট জগতে সবেরই বৈপরীত্য আছে।দিন না থাকলে রাতের মহিমা উপলব্ধি হয় না।সত্য-মিথ্যা,আলো-অন্ধকার,ভালো-মন্দ, ইত্যাদি। ক্রোধান্বিত হয়ে যে কলরব সেই অহংকারের মিথ্যা রব সেগুলোও প্রণব থেকেই সৃষ্টি।আমরা কেউই পূর্ণ নই সবাই ভগ্নাংশ আকারে আছি।খামতি আছে বলে সীমা আছে। গুণী ব্যক্তি সর্বদা অসীমের দিকে এগিয়ে যায়।যেমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পথ চলা শুরু কবিতা দিয়ে,একটি গুণ আরেকটিকে আকৃষ্ট করে, বিকশিত করে তাই অন্যান্য প্রতিভাতেও তিনি সফল হয়েছেন। নিজের গুণকে রেখে যেতে পেরেছেন কর্মের দ্বারা। শেষ জীবনে চিত্র শিল্পী হিসেবেও তিনি পরিচিত হয়েছেন।

অন্ধ ব্যক্তি যেমন আলোর সাগরে স্নান করে তবু আলো কেমন দেখতে পায়না।আলো শব্দটা জানে কিন্তু তার রূপ এবং বৈশিষ্ট্য প্রত্যক্ষ করতে পারে না।

প্রণবের পাঁচটি ভাগ আছে।জল,মাটি,বায়ু,অগ্নি,ব্যোম, এখানে পূর্ণ প্রণব ব্যোম।যার মধ্যেই সত্য বিরাজমান। পৃথিবীর সমস্ত শব্দের ধ্বনি রয়েছে যার মাধ্যমে স্বর্গে পৌঁছানো যাবে।এখানে স্বর্গ বলতে একত্ব লাভ।প্রণব শব্দ পরমপিতার গুণবাচক তাই তাঁর সাধনে ব্রহ্মদর্শন সম্ভব।এই সৌন্দর্যের প্রভাব তুমি জানতে পারবে। সৃষ্টির রহস্য অনুযায়ী তুমি যে বীজে পরমপিতা থেকে জন্মগ্রহণ করেছো সেই বীজেই তোমার মুক্তি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ