দী়ক্ষা বৈজিক ভাষায় হয়। দীক্ষা গুণ অনুসারে পৃথক পৃথক ভাবে হয়। সকলার এক বীজ হয় না। পাপ গ্রহণ এবং অভেদজ্ঞান করিয়া বীজ প্রদান করেন। দীক্ষা নিয়ম পূর্রক কৃত হইলে এক মাসের মধ্যে দেবদর্শন সম্ভব। সুতরাং সত্যধর্ম্মের নিয়ম অনুসারে দীক্ষা না পাইয়া সত্যধর্ম্মী বলিতে পারেন না।
"নাম" প্রাপ্তগণ কখনই দীক্ষিত নহে সুতরাং সত্যধর্ম্মী হইতে পারেন না। "নাম" বীজ নহে পরম পিতার কোনও একটি গুণবাচক শব্দ মাত্র। বীজ সর্ব্ব সম্মূখে প্রকাশ্য নহে। দু একটি শব্দ উপমা স্বরূপ গ্রন্থে দেওয়া আছে মাত্র। মহাত্মা নিবারণ মাতাজী উপযুক্ত সাধক না পাইয়া ছয়জনকে সাধারণ "নাম" প্রদানের অনুমতি দিয়াছিলেন। তিনি এও বলেন উহা দীক্ষা নহে। ১৯৬৩ সালে বড়মগরা উৎসবে প্রশ্ন উত্তরে লিখিত দিয়াছিলেন। অতএব আত্মন্নতির জন্য সঠিক ভাবে দীক্ষিত হওয়া আবশ্যক।
পরমাত্মা হইতে অনন্ত রূপে পৃথক পৃথক ভাবে আত্মা বিচ্চুত হয় বীজ দ্বারা। সর্ব্বপ্রথম বীজ সৃষ্টি হয় তাহা হইতেই বৃক্ষে রূপান্তরিত হয় ঠিক তেমনই যে বীজ হইতে যে আত্মা সৃষ্টি হইয়াছে সেই বীজেই তাহার মুক্তি সুতরাং সেই বীজ পরমপিতা হইতে একমাত্র সৎ গুরুই সংগ্রহ করিয়া শিষ্যকে প্রদান করিয়া থাকেন। অতএব ঐ বীজ না পাইলে মানব জন্মের স্বার্থকতা সম্পদন হইবে কি করিয়া???
বীজতগ ভাষা বলিয়া বৈজিক শব্দ হইয়াছে। যেমন বাংলা ভাষায় চারলাইন লিখা হইল। উহাকে সংক্ষিপ্ত অর্থাৎ সংস্কৃত ভাষায় একটী লাইনে করা হইল, এই সংস্কৃত লাইনটী যখন একটী শব্দে পরিনত হবে তাহাকেই বীজ ভাষা বা বৈজিক ভাষা বলা হইয়া থাকে। কোনও একটী গাছ তাহার পাতার আকৃতি ও শিরা উপশিরা এবং রং বিভিন্ন প্রকার সংঘটিত হয় উহা সকলি বীজে সুপ্ত অবস্থায় বিদ্যমান। ঐ গাছের ফলের গঠোন, রং আকৃতি বিভিন্ন হইও সকলি ঐ বীজের ভেতর গুপ্ত ভাবে থাকে। ঐ গাছের আয়ু, গঠোন ডালের বৈশিষ্ট্য, ঐ ফলের শত শত বৃক্ষের জন্ম সকলই সমাহিত রহে বীজে সুতরাং বীজ সুপ্ত এবং গুপ্ত উহাকে কৃপণের মত হইয়া সযত্নে রক্ষা করিয়া রাখিতে হয়। ঐ বীজ হইতে বৃক্ষে পরিণত করিতে হইলে জল, বাতাস, শুদ্ধ মাটি, খাদ দিয়া যত্ন করিলে অর্থাৎ সাধক কঠোর সাধনা ও উপাসনা দ্বারা উন্নতি করিতে পারিলেই সিদ্ধি প্রাপ্ত হয় এবং মুক্তি লাভ করেন। যে সাধক যত যত্ন করিতে পারিবে ততই সে ভাল ফলে ভূষিত অর্থাৎ সিদ্ধি প্রাপ্ত হইবেন।
সুতরাং প্রকৃত গুরু হইতে বৈজিক বীজ প্রাপ্ত হইলে নিজেকে অর্থাৎ আত্মাকে চিনিতে পারা যায় এবং পরম আত্মার দর্শন লাভে কৃতার্থ হইয়া মানব জন্মের সার্থকতা সম্পাদন সম্ভব হয়। প্রতিটি আত্মার জন্ম জন্ম ধরিয়া নিজ নিজ পাপ ও পুণ্য সঞ্চিত থাকে ও তাহার সমাধানও ঐ বীজে বর্ত্তমান সুতরাং ঐ বীজ প্রাপ্ত না হইলে জীবন নরক গামী হয়।
0 মন্তব্যসমূহ