সত্যধর্ম্মে ইহলোকে নারীদের দীক্ষা দেবার অধিকার নাই।
পারলৌকিক মহাত্মাদিগের নিকট হইতে আমরা এই ধর্ম্ম প্রাপ্ত হইয়াছি। সুতরাং তাঁহারাই এই ধর্ম্মের প্রচারক। -সত্যধর্ম্ম প্রথম পরিচ্ছেদ।
ইহলোকে লিঙ্গ ভেদে পুরুষ কঠোর গুণের অধিকারী ও নারী কোমল গুণের অধিকারী পরলোকে লিঙ্গ ভেদে নাই ঐ স্থানে ইহলোকের পুরুষ আত্মা কঠোর গুণা গুণাত্ত্বক আর নারীরা কোমল গুণাত্ত্বক।
ইহলোক হইতে নারীগণ আত্মোন্নতী পূর্ব্বক পরলোকে প্রস্থান করিলে তাঁহারা পরলোক হইতে ইহলোকে দীক্ষা দিবার অধিকার জন্মে।
এই ধর্ম্ম পরলোকের, ইহলোকের ধর্ম্ম না অতএব ইহলোকের ন্যায় নিয়ম নাই। ইহলোকের নিয়মে পূর্ব্বেই বলিয়াছি যে নারীরা বীজ ধারক না কিন্তু দুজন দুজনার সহায়ক হইয়া নারীরা পুরুষের সহায়তায় গর্ভধারণ করিয়া থাকেন তেমনই দীক্ষার ক্ষেত্রে পুরুষরূপে গুরু পিতা হইয়া মাতা রূপী বাহ্য জগতের অভিজ্ঞতার সহিত মিলিত রূপে একটী দীক্ষিত সন্তানের পরমজন্ম প্রদান করেন।
দীক্ষা একটী প্রজন্ম, এই জন্মের পিতা গুরু, মাতা বাহ্য জগতের অভিজ্ঞতা (বিশিষ্ট জ্ঞান), শ্রদ্ধা তাহাদিগের প্রকৃতপ্রেম, শুক্র প্রণবযুক্ত বীজ, শোণিত বিশ্বের মনোহর ভাব এবং জন্মভূমি পরমেশ্বরের পরম প্রেমময় অঙ্ক-দেশ। - গুরুতত্ত্ব
এক্ষণে বক্তব্য এই যে এই জন্মের পিতা গুরু বলিয়াছেন, পিতা পুরুষ মাতা গুরু বলেন নাই। মাতা বাহ্য জগতের অভিজ্ঞতা, ইহজগতের ন্যায় নিয়ম নাই যাহা মিথ্যা তাহা হইতে পারেনা। যেমন নারীরা ইহজগতে গর্ভ ধারণে সমর্থ, কিন্তু পুরুষেরা তাহা অপারক। পুরুষেরাই বীজ ধারক, নারীরা অপারক ইহা যে সত্য। অতএব ইহজগতে নারীরা দীক্ষা দিতে অপারক।
গুরু হইবার উপযুক্ত গুণ ঃ-
যদি শাস্ত্রজ্ঞান সম্পন্ন, প্রেমময়াদিঅবস্থা বিশিষ্ট (যেমন প্রেমময় অবস্থা, গানময় অবস্থা, দূরদর্শনময় অবস্থা এবং ভাবি-জ্ঞানময় অবস্থা।) কঠোরতর ধর্ম্ম্যকর্ম্মে সুদক্ষ, অভেদজ্ঞান করিতে পারি, বাক্ সিদ্ধ, অর্থবিষয়ে নিস্পৃহ, জাতগুণ-সমূহের (কাম, ক্রোধাদি জাতগুণ।) লয়-সম্পাদনে কৃতকার্য্য বা সমর্থ, এবং পাপগ্রহণ, গৃহীত পাপ হইতে তৎক্ষণাৎ মুক্তিলাভ, আয়ুঃ প্রদানশক্তি ও আত্মার অসীমত্বসাধনা প্রভৃতি বিষয় সিদ্ধ, বিশেষতঃ ভক্তি প্রেম ও শ্রদ্ধা এই গুণত্রয়সম্পন্ন ব্রহ্মদর্শী বা তদীয় অনুজ্ঞাত মহাপুরুষের দর্শন লাভ কর, তবে তাঁহার নিকটেই দীক্ষা গ্রহণ করিতে পার। -গুরুতত্ত্ব
উন্নত গুণবিশিষ্ট হইয়া, (পারলৌকিক মহাত্মারা যাঁহাকে এই ধর্ম্মের যাবতীয় মর্ম্ম জ্ঞাপিত করিয়াছেন এবং গুণরাশি দর্শনে যাঁহাকে প্রকৃত উপযুক্ত পাত্র বিবেচনা করিয়া, প্রথমে পারলৌকিক মহাত্মারা, পশ্চাৎ স্বয়ং পরমপিতা এই ধর্ম্ম প্রচারার্থে অনুমতি করিয়াছেন,) সেই সাধকের নিকটে বা তদাদিষ্ট-ব্যক্তির নিকটে দীক্ষিত হইলেই এই ধর্ম্ম অবলম্বন করা যায়। -সত্যধর্ম্ম দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
আত্মাকর্ষণ গুণের চেয়েও আত্মানুভূতি ও আত্মদর্শন অতি উন্নত অবস্থা।(সত্যামৃতের পঞ্চম পরিচ্ছেদে বর্তমান) অতএব আত্মা দেখিবার ক্ষমতা হইলে বুঝিতে হইবে তাঁহার আত্মারষণের গুণসমূহ সকলই আছে একবার দেখা যাউক প্রেম, ভক্তি, সরলতা, একাগ্রতা, পবিত্রতা, ঈশ্বর আস্তিক্য-জ্ঞান ও মনের কুপথ-গমন-বিমূখতা এই সাতটি গুণ যাঁহার আছে সেই ব্যক্তি আত্মাকর্ষক হইতে পারেন। আত্মাকর্ষক বলিয়া, বহুবর্ষ যাবৎ যে-লোক, জগতে বিদ্যমান ছিলেন, তিনিও মিথ্যা কার্য্যে আত্মাকর্ষণ বলিয়া অভিহিত করিয়া দিয়াছেন। মায়াবিনী, পাপিনী রমণীর মধ্যেও আত্মাকর্ষকতা দেখা গিয়াছে। তবে ঐ মিথ্যাপ্রযুক্ত, ঐ নারী কখনো সদ্-ব্যক্তি দ্বারা পূজিত হয় না। যে নারী গণ পরান্নভোজিনী, বিধবা, বিশেষতঃ পতিনিন্দা পরায়না, পতি হইতে দূরে থাকে, এই পরমাশক্তি তাহাদের মধ্যে কখনও বিদ্যমান থাকে না। এই শক্তি বিষয়, তাহারা যাহা প্রকাশ করে উহা প্রবঞ্চনা। যেই নারী, মহামতি সাধককে কিংবা গুরুদেবকে নিন্দা করে, ধর্ম্মলাভেচ্ছু ব্যক্তিগত তাঁহাকে পরিত্যাগ করিবেন। সেই নারী, পরের ক্ষতি-কারিণী, আত্মগৌরব-যুক্তা, অভিমানিনী, অন্যের উপকার করিয়া, স্বমুখে প্রকাশ-কারিণী, বিশেষতঃ গুরু ও শিষ্যের বিভেদ কল্পনা করে, তাহার আত্মাকর্ষকতাকে নিশ্চয়ই প্রতারণা বলিয়া জানিবে।
মূলকথা নারীদের নিয়া এতো অবস্থান কেন গুরুদেব লিখিয়াছেন কারণ গুরুদেব জানতেন এই পরিস্থিতি পূর্ব্বেও হইয়াছে অদ্যাপিও হইবে অতএব যাহাতে এইরূপ পাপকর কার্য্য যাহাতে না হয় তাহারি জন্য আমাদের গুণে প্রস্তুত করিতে হইবে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে যদি কোনো ব্যক্তি পাপাচারী ও অনুপযুক্ত গুরুর নিকটে অথবা স্ত্রীলোকের নিকটে দীক্ষা গ্রহণ করে, তবে উক্ত দীক্ষা প্রকৃত না হওয়াতে, অন্য উপযুক্ত গুরুর নিকটে যাইয়া উক্ত দীক্ষা বীজের সংস্কার করাইবে ( অঙ্গহীনৈ র্জ্ঞাহীনৈঃ পাপিভির্ব্যচারি, পপিভির্ব্যতিচারিভিঃ। প্রদত্তেগুরুভি র্মন্ত্রঃ পুনঃ সংস্কার মর্হতি।। তথাচ -স্বপ্ললব্ধঃ স্ত্রিয়া দর্ত্তঃ পুনঃ সংস্কার মর্হতি। -গুরুতত্ত্ব
-আদিষ্ট নিরুপম।
কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে যদি কোনো ব্যক্তি পাপাচারী ও অনুপযুক্ত গুরুর নিকটে অথবা স্ত্রীলোকের নিকটে দীক্ষা গ্রহণ করে, তবে উক্ত দীক্ষা প্রকৃত না হওয়াতে, অন্য উপযুক্ত গুরুর নিকটে যাইয়া উক্ত দীক্ষা বীজের সংস্কার করাইবে ( অঙ্গহীনৈ র্জ্ঞাহীনৈঃ পাপিভির্ব্যচারি, পপিভির্ব্যতিচারিভিঃ। প্রদত্তেগুরুভি র্মন্ত্রঃ পুনঃ সংস্কার মর্হতি।। তথাচ -স্বপ্ললব্ধঃ স্ত্রিয়া দর্ত্তঃ পুনঃ সংস্কার মর্হতি। -গুরুতত্ত্ব
-আদিষ্ট নিরুপম।
