পরমেশ্বর অব্যক্ত।



শব্দ ব্রহ্ম অথচ অথচ পরমেশ্বর কে সম্পূর্ণ ভাবে ভাষায় ব্যক্ত করা যায় না।সৃষ্ট জগতের সকল সৃষ্টির মধ্য তাঁর অনন্ত গুণের সত্ত্বা বিদ্যমান। কিন্তু কোন একটি বিষয়কে পরমেশ্বর বলা যায় না।জগদীশ্বর অর্থাৎ এই জগতের সৃষ্টি কর্তা তিঁনি অনন্ত, অসীম, নিরাকার গুণের সমষ্টি।তিঁনি নারী নন, পুরুষ নন,সজীব নন,নির্জীব নন,তিঁনি সগুণ আবার নির্গুণ। পরমেশ্বর এক এবং অদ্বিতীয় আমাদের মতো তিঁনি জন্মগ্রহণ করেন না অতএব তাঁর মৃত্যু নেই।এই সীমার মধ্যে তিঁনি অসীম ভাবে বিরাজমান।এই প্রকৃতির গুণকে অন্তরস্থ করে নিজের ভেতরের গুণাবলীকে অভ্যাসের দ্বারা উপলব্ধি করাকেই আশ্রম গ্রহন করা বলা হয়। ইঁট, কাঠ, পাথর দিয়ে ইমারত নির্মাণ করলে তা প্রকৃত আশ্রম নয়।হৃদয় মন্দিরে যদি অনবরত পরমেশ্বরের গুণকীর্তন করা যায়,সেই উৎসব মুখরিত অবস্থার অধিকারী সাধক প্রকৃত আশ্রমী। সৃষ্টিকর্তা যে আমাদের অন্তরে আছেন এবং বাইরেও আছেন এই উপলব্ধি করতে পারাই মানব জন্মের সার্থকতা।

পরমেশ্বর নিরাকার,অনন্ত অনন্ত অনন্ত গুণের সমষ্টি,তিঁনি অসীম । তাঁর গুণের প্রভাবে এই যে সৃষ্টজগতের সীমা আছে,এই সৃষ্টির মধ্যে পরমেশ্বর এঁর অনন্ত ভাব বিদ্যমান।বহু গুণ একত্রতি হয়ে একটি বস্তু পদার্থের সৃষ্টি হয় সেটি সাকার তবে সেই বস্তুর এক একটি বৈশিষ্ট্য বা গুণকে যদি গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে নিরাকার গুণ এবং যা ক্রমশ অসীমের দিকে বিস্তৃত।আমরা সৃষ্টির নিয়মে জন্মগ্রহণ করি এবং আমাদের প্রত্যেকটি ব্যাক্তির মধ্যে স্বতন্ত্রতা আছে কারন আমাদের আত্মায় যে দোষ এবং গুণ থাকে যার প্রধান উদ্যোক্তা চৈতন্য শক্তি যার কারনে আমাদের মধ্যে সবার বিবেক বোধ, ক্রিয়াকলাপ বিভিন্ন হয় এভাবে আমরা একজনকে আরেকজন এর থেকে আলাদা ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন হিসেবে জানতে পারি।
পরমেশ্বর থেকে আমরা যে বীজে জন্মগ্রহণ করি সত্য ধর্ম্মে সেই মক্তি বীজ গুরু পরমেশ্বর কে অভেদ করে আমাদের প্রদান করেন,জন্ম জন্ম ধরে আমার ওই বীজেই ভূমিষ্ট হতে হবে।যতসময় না আমি ওই বীজের মধ্যে থাকা গুণগুলো সাধনা এবং উপাসনা দ্বারা অভ্যাস করে নিজের আত্মায় সঞ্চিত করে ব্রহ্মদর্শন অর্থাৎ একত্ব পাচ্ছি ততসময় আমার মুক্তি নেই।অষ্টপাশ ষড়রিপুর তাড়নায় আমরা প্রতিদিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাই এই যন্ত্রনা থেকে পরমেশ্বর আমাদের মুক্তি দিতে পারেন।বহু জন্ম ধরে গুণের অভাবে আত্মা অতৃপ্ত থাকে। প্রকৃতির মধ্যে যে নিয়ম শৃঙ্খলা তাই পরমেশ্বর।প্রকৃতি তাঁর গুণের দ্বারা পরিচালিত হয়। আমাদের অন্তরে তিঁনি আছেন পরমাত্মা রূপে,আবার বাইরেও সমস্ত বিষয়ের মধ্যে তাঁর সত্ত্বা বিদ্যমান। পরমেশ্বর এঁর অস্তিত্ব স্বীকার না করে কেউ যদি নিজেকে নাস্তিক বলে মূর্খের পরিচয় দেয় তাকে বিজ্ঞান সম্মত ভাবে প্রমান দেওয়া যাবে যে তিনি আস্তিক। ব্রহ্মদর্শন এর পর কোন একটি গুণে পরমেশ্বর এঁর অনন্ত ভাব উপলব্ধি করার সুচারু ব্যাবস্থা সত্য ধর্ম্মে আছে। তারপর পরমেশ্বর এঁর অস্তিত্ব সম্পর্কে একত্ব প্রাপ্ত সাধকের কোন সংশয় থাকে না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ