সবার ওপর মানুষ সত্য তাহার ওপর নাই কথাটি মিথ্যা।


   সবার উপর মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই:

মনুষ্যত্ব অর্জনের উপায় যিনি আবিষ্কার করেছেন ঈশ্বর গুরুনাথ তিঁনি এ বিষয়ে লিখেছেন, " মানবে ক্ষমতা আছে জনপদবাসী বলে। আমি তো হেরিনা কিছু শকতি মানবদলে। শুন শুন নরগণ, তোমরা হও করণ কেহ নহ ফলবান্, শকতির শুভ ফলে। গুণ দাতা গুণময়, একমাত্র দয়াময়, অনন্ত করুণাচয় কেবল তাঁহার- তিনিই শক্তির কারণ মানব তাঁর করণ, অহঙ্কার অকারণ করনা এহেন কালে"।।

সত্য গুণটি মানবতার পরিচয় বহন করে।আমরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সেই সত্যের ওপর ভর করে জীবনকে যাপন করতে পারছি কি ? অবশ্যই না।যে পারবে বা চেষ্টা করবে সে নিজেকে প্রকৃত মানুষ বলতে পারবে শ্রেষ্ঠ তো অনেক পরের কথা। শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করতে হলে সকল প্রকার নিকৃষ্টতা কাটিয়ে উঠতে হয়। উপায়ই জানে না কাটিয়ে উঠবে কেমন করে ? ১৮৮৫ সালের ২০ শে অক্টোবর শ্রেষ্ঠ পথ আবিষ্কার হয়েছে। জন্মসূত্রে পাশবিক বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ পশুত্ব, সত্যকে অবলম্বন করার পর মনুষ্যত্ব, সত্য পালনের চেষ্টা সহ পশুত্ব পর্যায় দেবত্ব, কোন একটি গুণের অনুশীলন দ্বারা সেই গুণে ব্রহ্মদর্শন ঈশ্বরত্ব এবং সবশেষে নিত্য ব্রহ্মদর্শন এর মাধ্যমে আত্মার অসীমত্ব সাধনা শ্রেষ্ঠত্ব অর্থাৎ আত্মোন্নতির অতি উন্নত অবস্থা।

এই সৃষ্টজগত বিশ্বপ্রকৃতি স্রষ্টার নিয়মে বাঁধা, স্বাধীনতার বশে কোন ভুল তাদের হয়না। এই আমরা যারা নিজেদের মানুষ বলি উপরন্তু শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করি তাদের মান এবং হুঁস আজকাল তলানিতে এসে ঠেকেছে। সেই মিথ্যাচারের নরক থেকে তোলার জন্যই সত্যের পথ, সততার পথ, নিষ্ঠার পথ, মনুষ্যত্ব অর্জনের পথ জানানো হচ্ছে।

প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান সে জড় হোক বা জীব প্রতিনিয়ত তারা আমাদের সেবায় রত, এই পৃথিবী তথা ব্রহ্মাণ্ডের ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে যে নিয়মে তারা শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রকৃতির সেই নিয়মই ঈশ্বর। ঈশ্বর কথার অর্থ গুণ। অনন্ত অনন্ত অনন্ত গুণের সমষ্টি পরমেশ্বর। যখন সার্বিকভাবে আমরা একে অপরকে গুণ অর্জনে সহায়তা না করতে পারব ততসময় আমাদের চেতনাবোধ জাগ্রত হবে না। আর সেই অজ্ঞানতার কারনে আমরা কেবল মানুষরুপী হয়ে থেকে যাব। আর আমরা চাই বা নাই চাই বেঁচে থাকার তাগিদে আমরা গুণের অভ্যাস করি তবে জেনে করলে যে তা অধিক ফলপ্রসূ হবে এবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। 

জল, বাতাস, মাটি, উদ্ভিদ, পশু, পাখি, কীটপতঙ্গ, বিভিন্ন অনুজীব যাদের খালি চোখে দেখা যায় না ইত্যাদি থেকে বৃহদাকার সজীব বা নির্জীব তারা আমাদের উপকার করে আমরা যাতে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে পারি। কিন্তু আমাদের স্বার্থপরতা, লোভ, অজ্ঞানতার কারনে তারা ভীষনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই শ্রেষ্ঠ বলার আগে জেনে নেওয়া উচিৎ শ্রেষ্ঠত্বের বৈশিষ্ট্যগুলো কি। সত্যধর্ম্ম বিনা এই পথ কেউ দেখায়নি দেখানোর শক্তিও নেই।

জন্মসূত্রে আমরা অষ্টপাশ ষড়রিপু নিয়ে জন্মগ্রহণ করি,তাই সকলেই পাশবদ্ধ পশু। সত্যধর্ম্ম জ্ঞানের ধর্ম্ম। আত্মার উন্নতি সাধনের পথ। অজ্ঞানতা রয়েছে বলেই পৃথিবীবাসীর বুঝতে এত অসুবিধা হচ্ছে। এই ধর্ম্মের নিয়ম অনুসারে প্রত্যেককে প্রথমে আগে স্বীকার করতে যে

***[আমি ভালো না। ভালো হতে চাই। জন্মসূত্রে আমি পাশবদ্ধ পশু। এই পশুত্ব অর্থাৎ অষ্টপাশ ষড়রিপুর প্রবৃত্তি থেকে সত্যকে অবলম্বন করে গুণের অভ্যাস দ্বারা মানুষ হতে চাই। এই মনুষ্যত্ব অর্জনের উদ্দেশ্য নিয়েই আমি সত্যধর্ম্মের প্রতিটি বিষয়কে অন্তরস্থ করব]।

এই নিয়মের বাইরে কিছু হয়না। এখানে কাউকে তোষামোদ করা হয় না। প্রকাশ্যে নিজেকে পাশবদ্ধ পশু বলতে শিখতে হয়। এটা সত্যধর্ম্মের নিয়ম। তারপর জ্ঞানের দ্বারা সত্যকে জানা যায়। তার আগে বাদবাকি কিছু বোধগম্য হবে না এটা স্বাভাবিক।কারণ গুণের বৈশিষ্ট্য পরমপিতার সৃষ্টি। এই নিয়মই ঈশ্বর আর অন্তত গুণের সমষ্টি পরমেশ্বর। সুতরাং মিথ্যাচার করে গুণ বোঝা যায় না। গুণ সত্য যা বাস্তব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ