“ঈশ্বরাদিষ্ট পুরুষ নির্ণয় করা সুকঠিন নহে; কেননা যাহাদিগের জীবন একই স্রোতে একই ধর্ম্ম ভাবে প্রবলবেগে প্রবাহিত, তাঁহারাই ঈশ্বরাদিষ্ট, তদ্ভিন্ন অন্য ব্যক্তিরা ঈশ্বরাদিষ্ট নহেন। এই রূপে ঈশ্বরাদিষ্ট পুরুষ নির্ণয় করিলেই পরম উন্নতি লাভ হইতে পারে। কিন্তু তাহারা যেরূপ কার্য্য করিয়া গিয়াছেন, তাহা করা কর্তব্য নহে। কারণ অধিকারী ভেদে কার্য্য ভিন্ন ভিন্ন হয়..............অতএব আমাদিগের পক্ষে কর্তব্য এই যে, কোন ব্যক্তির বিশেষতঃ ঈশ্বরাদিষ্ট ব্যক্তির কার্য্যের নিন্দা না করিয়া স্বীয় কর্তব্য নির্ধারণ পূর্ব্বক তদনুসারে কার্য্যকরা।" - আমরা ধর্ম্ম জগতের এই কর্ত্তব্য এখনও নির্ধারণ করতে অক্ষম।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে বর্তমানে আদিষ্ট হয়েছেন বলে শ্রীমান রনজিৎ হালদার প্রচার করছেন এবার তাহলে তাঁকে আমরা বিশ্বাস করবো কি করে?
সহজজ্ঞানের প্রভাবে লোকমুখে শুনে তাঁর সম্বন্ধে নিজের একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছে তাঁর কথা মতো কাজ করে তিন চারটে উপলব্ধি পেলে মানতে পারবে তিনি আদিষ্ট। প্রথমত আদিষ্টের গুণাবলী কি কি সেগুলো আমাদের জানতে হবে তাঁর জন্য আমাদের উপাসনা এবং সাধনা করে ধর্ম্ম বিষয়ের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে, তার জন্য নিজেদের ধর্ম্ম বিষয়ের সেই কার্য্য জ্ঞান অর্জন করতে হবে তারপর সেই কার্য্য-জ্ঞানের প্রয়োগ শিখতে হবে, এখন চারিদিকে কার্য্য জ্ঞানের অভাব এতো বেশী এবং কারণ আগে জানার ব্যাস্ততা দেখে বোঝা যাচ্ছে আমরা সকলেই অনায়াসে সব পেতে চাই, আমাকে এই করে দেখাক আমাকে ঐ করে দেখাক যেন সিদ্ধির ব্যাবহার যেন অতি সামান্য। কথায় কথায় প্রমান চায়, এই সামান্য জ্ঞানেও অক্ষম যে গুরু আজ্ঞা বিনা এবং একত্ব পাওয়ার জন্য স্বইচ্ছায় সিদ্ধি ব্যায় করা সতধর্ম্মের নিয়ম না। তাই তোমরা সত্য গ্রহনের মূল উপায় অবলম্বনে অনিচ্ছুক, কারন তোমরা সকলেই উপাসনা বিমুখ এবং সাধনা অনেক দূরের কথা। যিনি আদিষ্ট হয়েছেন তাঁর জীবনের ধারাবাহিকতা কি ? তাঁর প্রতি যতখানি প্রত্যয় সহজ জ্ঞানে তাঁর গুণরাশী ও অন্যান্য বিশ্বাস তার কারনে তাঁর ওপর নির্ভর করে তাঁর কথা অনুযায়ী যদি উপাসনা সাধনা করে তাঁর কথামতো চলতে চলতে তার সম্বন্ধে ধীরে ধীরে জ্ঞান লাভ ঘটলে একটু একটু করে তাঁকে জানা যাবে, যে এই ব্যাক্তি আমাদের উন্নতি করাতে পারবে কিনা? পরে যখন উপাসনা করতে করতে আনন্দ অনুভব হবে তখনও তাঁকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করা যাবে না কারন অনির্বচনীয় শান্তিলাভ ও যে উপাসনার ফল তা তোমরা বুঝিয়ে দিতে পারবে না, শুধু বুঝবে কারন জানো বা না জানো উপাসনা যে অবশ্যই করা কর্তব্য তদ্বিষয়ে আর সন্দেহ নাই, এটাই বিশ্বাসের দ্বিতীয় অবস্থায়, প্রথম অবস্থার কথা দূরে থাকুক এই অবস্থাপন্ন মানবের অধঃপতন হতে পারে, কেননা তখন পর্য্যন্ত কারন জ্ঞান হয় না, এজন্য যদি কোনো ব্যাক্তি আদিষ্টের বিপরীতে প্ররচনা মূলক যুক্তি সমূহ এমন ভাবে তোমাদের নিকটে বলে যে তোমরা স্বীয় বুদ্ধি দ্বারা তার খন্ডন কোনো প্রকারে করতে পারনা, এমনকি কোনো ব্যাক্তি যে কোনো প্রকারে খন্ডন করতে পারে তাও স্ববুদ্ধি প্রভাবে বুঝতে পারোনা, তবে ঐ খন্ডনকারীর যুক্তিতে তোমাদের অধঃপাত হতেপারে এবং তোমাদের মত টলতে পারে। গুরুদেব বলেছেন - এই জন্যই প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থাপন্নদিগের বিপরীত - বাদিদিগের সহিত কূটতর্ক করা বা কাউকে উপদেশ দিতে প্রবৃত্ত হওয়া উচিত নয়, কারন তাহা হলে সময় বিশেষে স্বীয় অধঃপাতকে সাদরে আহ্বান করা হয় , এবং আমার কাছে সেরকম কিছু ব্যক্তিত্যের উদাহরণও আছে তাদের নাম নিয়ে কিছু লেখা অনুচিত হবে বলে লিখলাম না।
অনন্তর আদিষ্টের কথা অনুযায়ী কাজ করতে করতে যখন তিন থেকে চারটে ফল পেলে যেমন নিদ্রা অবস্থায় উপাসনার সময় পার হয়ে যাচ্ছে তাই আদিষ্ট তোমাদের ডেকে দিলেন, আবার আদিষ্টের কথা অনুযায়ী তোমরা গুরুদেবের দর্শন পেলে, আবার তোমাদের ঘোর বিপদ থেকে ততক্ষণাত রক্ষা করলেন, তাঁর কথায় তোমারা পুরণ ব্যাধি হতে মুক্তি পেলে ইত্যাদি এই শক্তির পরিচয় যখন তোমরা পাবে তখন তোমরা তাঁকে প্রকৃত অটল বিশ্বাস করতে পারবে, যা কখন টলবে না।
দূরে বসে ঢিল ছুড়ে কার্য্য না করে প্রথমেই এটার কারণ ওটার কারন জানতে চাইলে এবং নিয়মের বিপরীতে কাজ করলে তাঁকে জানা তো দূরের কথা তাঁর প্রতি ঘৃনার সৃষ্টি হবে কারন গুরুদেব লিখেছেন প্রথমে প্রত্যয় বা পতীতি (বিশ্বাসের অঙ্কুর) দ্বিতীয় নির্ভরতা বা ঐ প্রত্যয়ের ধারণা (বিশ্বাসের পূর্বাবস্থা) তৃতীয় বিশ্বাস বা অটলাবস্থা।
আজ আমাদের সৌভাগ্য যে পুনঃরায় আদিষ্টের অগমন ঘটেছে, আসুন আমরা তাঁর গুণের সঙ্গে পরিচয় হই।
১) শাস্ত্রজ্ঞান সম্পন্ন :- এতদিন ধরে সত্যধর্ম্মের ভুল ব্যাখ্যা করে সকলের আত্মোন্নতির ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে। এখন বর্ত্তমান প্রবর্ত্তক গুরু লাইন ধরে ধরে সঠিক ব্যাখ্যা করে আমাদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যাচ্ছেন। শাস্ত্র থেকে গুহ্য বিষয় আমাদের তুলে ধরছেন তার ফল স্বরূপ লিপিবদ্ধ করেছেন "জন্মান্তর বীজমন্ত্রের রূপ", "গুরুভক্তি সঙ্কট', "গুরুগীতার সরল ব্যাখ্যা", "গুরুগীতাই ঈশ্বর সঙ্গীত", আমরা সত্যধর্ম্মাবলম্বীগণ সত্যেষ্ট, ইত্যাদি। এতদিন ধরে সত্যধর্ম্ম কি প্রচার হয়েছে ভাবুন যারা সত্যধর্ম্মে এসেছে তাদের ঘরে কল্পিত ছবি মূর্তি এখনও বর্তমান, কিন্তু প্রবর্ত্তক গুরু বাংলা ও উড়িষ্যায় ধর্ম্ম প্রচারের কাজ করছেন শাস্ত্র পাঠ শুনে তারা কল্পিত ছবি ফেলে দিয়ে গুরুদেবের ছবি আসনে বসিয়েছে।
২/ (ক) প্রেমময়াদিঅবস্থা বিশিষ্ট :- প্রবর্ত্তক গুরুদব সকল মানুষকে ভালোবাসেন, কেমন দেখেছি যারা প্রবর্ত্তক গুরুদবকে অপশব্দ বলে লাঞ্ছিত করেছে ও প্রাণ-নাশের হুমকি দিয়েছেন তাদের বুকে জড়িয়ে ধরেছেন। তার ভালোবাসায় কাছে গেলে কাম, ক্রোধ বশীভূত হয়।
(খ) গানময়ী অবস্থা:- বহু মানুষ দেখেছে তাঁর গানময়ী অবস্থা, ঈশ্বরের গানে মগ্ন হয়ে ছন্দ মিলিয়ে নানান কথার জবাব দিয়েছেন।
(গ) দূরদর্শনময়ী:- আমাদের মধ্যে যারা উপাসনা করতে করতে ঘুমিয়ে পরি বা ভুল গান করি তিনি ফোন করে, না হয় সূক্ষ্মভাবে ডেকে দেন।
(ঘ) ভাবি জ্ঞানময়ী অবস্থা:- বহু সত্যধর্ম্মের ভবিষ্যতের কথা বলেদিয়েছেন এটাই ভাবি-জ্ঞানময় অবস্থা।
৩/ অভেদজ্ঞান করিতে পারগ :- আমাদের সকলকেই দীক্ষার সময় অভেদ জ্ঞান করেছেন। তাই উপাসনায় বা বিপদে তিনি রক্ষা করেন বা সাহায্য করেন, আপনাদের মনে প্রশ্ন আসে না গুরু শিষ্যকে কিভাবে রক্ষা করে গুরু শিষ্যকে অভেদ করে বলেই রক্ষা করতে পারেন, আর এই পদ্ধতিতে গুরু শিষ্যকে রক্ষা করে থাকেন, একবার দীক্ষা রূপ জন্ম হলেই গুরু শিষ্যের জন্মান্তর ভার গ্রহন করেন, যতোদিন না শিষ্যের উন্নতি হচ্ছে।
৪/ বাকসিদ্ধ :- তাঁর কথায় বহু রোগব্যাধি দূর হয়েছে।
৫/ অর্থবিষয়ে নিস্পৃহ :- তিনি আমাদের কাছে কিছুই চান না। তিনি একটাই জিনিস চান আমরা যাতে উন্নতি করি।
৬/ কঠোরতর ধর্ম্মকর্ম্মে সুদক্ষ:- তিনি দিনের পর দিন ২৪ ঘন্টা সত্যধর্ম্মের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি বহুদিন এক নাগাড়ে উপাসনা করতে পারেন। তিনিই প্রথম উৎসবে তিনঘন্টা করে চারবার উপাসনা প্রচলন করেছেন যা শেষ হয় রাত ২ থেকে ২.৩০ পর্যন্ত। তিনিই প্রথম উৎসবে ত্রিসন্ধ্যা গুরু পূজা প্রচলন করেন। তিনি নিজে থেকে কঠোরভাবে সুচারুরূপে পরিচালনা করেন উপাসনায় কোনো পরিশ্রম তাঁর ভেতর দেখিনি। সকলকে ভোরবেলা সময়মত তুলে বসিয়ে দেন ব্রাহ্মমূহুর্ত্তের কাজ করার জন্য। আমরা তাঁর কাছে আছি তাই দেখতে পাই তিনি ক্ষুধাহীন, তৃষ্ণাহীন ও নিদ্রাহীন অবস্থায় বহু দিন উপাসনা করতে পারেন যা গুরুগীতায় লিপিবদ্ধ আছে, সমদর্শন সাধনায় সিদ্ধি লাভ হলে এমন হয়।
৭/ তিনি ধ্যানি :- গুরুদের লিখিত উপাসনা প্রণালী যা গুণী হয়ে ওঠার ফর্মুলা বা সূত্র। সেই সূত্র ধরে বহু গুণের উপাসনা রচনা করেছেন এখন পর্যন্ত ৩১টা গুণের উপাসনা করেছেন কারণ একজন যদি পবিত্রতা গুণে পরমপিতাকে পেতে চায় তাহলে তাকে ঐ পবিত্রতা গুণের উপাসনা বেশী করেই করতে হবে, নিশ্চয়ই অন্য গুণে করলে তত হবে না। পাশাপাশি অন্যান্য গুণ সামান্য করতে পারে। কিন্তু ঐ গুণটি গভীর ভাবে করতে হবে। এই উপাসনায় গুরুআহ্বান উপাসনার অঙ্গ না হলেও ঐ গুণেই গুরুকে ডাকতে হয়। কারণ যে বিষয়ের শিক্ষা নেব সেই বিষয়ের শিক্ষককেই আহ্বান করতে হয়। উপাসনায় শ্রেষ্ঠতাসূচক সঙ্গীত হতে ধন্যবাদ পর্য্যন্ত ঐ গুণের গান দিয়েই তৈরী করেছেন। উপাসনা প্রণালী অনুরূপ গুরুপূজার প্রণালী রচনা করেছেন যা গুরুদেব নিজে হাতে গুরুপূজার প্রতিটি গান লিপিবদ্ধ করে গিয়েছিলেন প্রবর্ত্তক গুরু তা উন্মোচন করলেন। উপাসনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধ্যান সেই ধ্যান কি করে করতে হবে তা তিনি করাচ্ছেন। কেননা যে গুণের উপাসনা হবে সেই গুণেরই ধ্যান করতে হয়। গুরুদেব বেশ কয়েকটি গুণের ধ্যান রচনা করে গিয়েছিলেন, যা এতকাল অন্তরালেই থেকে গিয়েছিল।
৮/অর্থবিষয়ে নিস্পৃহ:- তিনি আমাদের কাছে কিছু চান না। আমরা কিছু দিতে চাইলেও তিনি তা গ্রহন করেন না। তিনি একটাই জিনিস চান আমরা যাতে উন্নতি করি। তিনি বলেন পার্থিব কিছুই নিয়ে যাব না সব এখানেই পড়ে থাকবে। তিনি বলেন আমার একটাই সম্পদ তা হলো সত্যধর্ম্ম। তার সামান্য ছবি থেকে অর্থ আসে তা দিয়ে অল্প আহার করে। তিনি প্রতিষ্ঠিত শিল্পী দেশবিদেশে তাঁর ছবির প্রদর্শনী করেছেন তাঁর এক একটা ছবি বিক্রি হতো ৫০হাজার ১ লাখ টাকা এবং টিভিতে সাক্ষাৎকার ও পেপারে আর্টিকেল বের হতো দর্শক অটোগ্রাফ নিতে আসে এই গ্ল্যামার মোহ ছেড়ে সত্যধর্ম্মের জন্য আত্মোনিয়োগ করেছেন।
৯/পাপ গ্রহণ: - আমাদের যখন দীক্ষা হয়েছে তখন আমাদের পাপ গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গেই শরীর হালকা অনুভব ও আনন্দ হয়েছে। এতেই প্রমাণ হয় তিনি আমাদের পাপ গ্রহণ করেছেন এবং কর্ত্তন করেছেন কেনন আমাদের সকলার এত পাপ কর্ত্তন না করলে তিনি এতদিনে মরেই যেত।
১০/আয়ুপ্রদান : - বহু প্রমান লিখিত আছে আয়ু প্রদান করেছেন। মৃত্যূর মুখে (কোমায়) ছিলেন ডাক্তার বলেছিলেন বাঁচানো সম্ভব না তাকে একবছর বাঁচিয়ে রেখেছিলেন বিস্তারিত পরে জেনে নেবেন।
১১/আত্মার অসীমত্বসাধনা:- এই সাধনা বোঝার মত আমাদের ক্ষমতা নেই তাই বিশেষ লিখলাম না। শুনেছি এই সাধনা করলে ব্রহ্মাণ্ডের সকল বিষয় জানা সম্ভব।
১২/ভক্তি :- আজ পর্য্যন্ত এমন ভক্তি দেখতে পাইনি প্রবর্ত্তক গুরু আসার পর ভক্তি গুণ আমাদের সেখাচ্ছেন কি ভাবে গুরু ভক্তি করতে হয়। যা এতদিন হয়নি লেখনি দেখিয়ে দেখিয়ে আমাদের চোখ খুলেছেন। কিভাবে গুরুকে প্রদক্ষীণ করে করে প্রণাম করতে হয় গুরু বরণের মাধ্যমে গুরুদেব স্বহস্তে উপাসনা প্রনালী অনুরূপ গুরুপূজার গান লিখে গেছেন তা এখন করানো হয় যা ভক্তির অংশ গুরু পূজা ত্রিসন্ধ্যা করতে হয় তাতে মোহদূর হয় তা আমাদের শিখিয়েছেন এতে গুরুভক্তি বাড়ে। পরম পিতার দর্শন যিনি করেন তাঁকে ঈশ্বর বলা হয় তাই গুরুকে ঈশ্বর বলা শিখিয়েছেন। গুরু পূজা ভিন্ন কাহারও পূজা করিবেনা তাই আমাদের শেখাছেন। তিনি প্রথম গুরুদেবের ছবির সঙ্গে প্রণবের ছবি রাখলে পাপ হয় তাতে ভক্তি নষ্ট হয় তা শিখিয়েছেন। প্রতি পদে পদে আমাদের ভক্তি শিখিয়ে যাচ্ছেন।
১৩/প্রেম:- তিনি যে কেমন প্রেম করেন তা ভাষায় বোঝানো যাবে না আমরা যতই অপরাধ করিনা কেন প্রথমে ভালভাবে বোঝান কখনো কখনো বকাদিয়ে কাছে টেনে নেন। যারা অপশব্দ বলে তাদেরকেও বুকে জড়িয়ে ধরেন। কাছে আছি বলেই একটু বুঝতে পারি। তিনি এতটাই প্রেমিক যে গুরুকে কিভাবে প্রেমগুণের পূজা করতে হয় তা আমাদের শিখিয়েছেন প্রেমগুণের গুরুপূজার প্রনালী করে। তার ভেতর কাম্যবিষয়ক কোনো শব্দ ব্যাবহার করেননি। কেননা গুরুকে প্রথমাবধি প্রেম করিতে পারিলে বড়ই সুখের হয় বটে কিন্তু তাহা অতি সুকঠিন। তিনি এই সুকঠিন কার্য্য আমাদের দিয়ে করিয়ে নিচ্ছেন হ্যাঁ এটা ঠিক প্রথম প্রথম বুঝতে ও করতে বড়ই কঠিন হয়েছিল।
১৪/শ্রদ্ধা: - তিনি পশু পাখির কাছ থেকে কিভাবে শ্রদ্ধা গুণ শেখা যায় তা আমাদের প্রতি পদে পদে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন।
১৫/ সর্ব্বকর্ম্মপরায়নাঃ : - তিনি নিজের কাজটা নিজে করেন কার্য্য মাত্রই তিনি দ্বিধা করেন না সঙ্গে সঙ্গেই লেগে পরে যে কোনও কাজের সুমিংসা করে দেন। সময় বিশেষ আমাদের কাজটাও নিজে হাতে করে দেন। একবার একা উড়িষ্যায় গিয়েছিলেন ধর্ম্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে সেখান হতে একজনকে সঙ্গে করে আনে তার সমস্ত বোঝা তিনি বহন করে। কেননা সে প্রবর্ত্তক গুরুর কাছ থেকেই দীক্ষা নিয়েছিল।
১৬/ সত্যভাষী:- তিনি যে সত্য গুণে একত্ব প্রাপ্ত সুতরাং সত্যে তাঁহার জীবন ব্রত। সত্য কার্য্য করতে ভীত হন না। আমরা যতদিন তাঁকে দেখছি তিনি সত্যের জন্য মৃত্যু বরণ করতে পারেন তা বোঝা যায়।
১৭/ তিনি সদা জাগ্রত: - সত্যধর্ম্মের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন যখনি কেউ ফোন করুক না কেন ওনাকে পাওয়া যায় কখনও নিদ্রায় আছে বোঝা যায় না। সে কেউ ফোন করুক দিন হোক বা রাত তাঁর বিচরণ সর্বত্র একই বুঝতে পারবেন সে যে বিশ্রাম কখন নেয় তা বোঝা যায় না।
১৮/ মাতাপিতৃহিতে যুক্ত:- আমরা দেখেছি তিনি কিভাবে পিতার সেবা করেন। তাঁর পিতার কাছে শুনলেই বোঝা যায়। একসময় পিতা মাতাকে নিজে সমদর্শনে সাহায্য করেছেন। কেননা পিতা মাতাকে উন্নতি না করাতে পারলে নিজের উন্নতি হয় না।
১৯/শান্তমানস :- সকলে এতটাই নাজেহাল করে তাতেও তিনি বিচলিত হন না। একটি উৎসবে বৃষ্টিতে প্যান্ডেলে জল জমে যায় কিন্তু একমাত্র তিনিই ঐ জলের মধ্যে পুরো উপাসনাটা করেছিলেন।
২০/ব্রাহ্মণ:- তিনি ১১সালে কল্যাণী শিশিরোৎসবে ব্রহ্মজ্যোতি দর্শন করেন। তিনি ব্রহ্মদর্শী।
২১/ জিতেন্দ্রিয় :- কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য্য এই ছয়টি আমরা প্রতি মুহূর্তে প্রত্যক্ষ করি।
২২/শুভদর্শন :- তিনি আমাদের আত্মোন্নতির জন্য সদা জাগ্রত।
সত্যধর্ম্মাবলম্বী হইতে হইলে এই ধর্ম্মে দীক্ষিত হওয়া আবশ্যক। নাম প্রাপ্তগণ দীক্ষিত নহে।
সাধারণের জন্য ১৮৮৫ সালে ২০ অক্টোবর সত্যধর্ম্মে প্রথয দীক্ষিত করিয়ে প্রবেশ শুরু হয়। সত্যধর্ম্ম আত্মোন্নতির ধর্ম্ম এই ধর্ম্ম একত্বপ্রাপ্তের দিশারী। এই ধর্ম্মে উন্নতি করার জন্য যে যে গুণের দরকার তা সত্যধর্ম্মে লিপিবদ্ধ আছে সুতরাং ঐরূপ গুণী হলেই পরমোন্নতি সম্মব। একত্ব প্রাপ্ত হলেই যে আদিষ্ট হবে তা নয়, আদিষ্ট হতে গেলে গুরুতত্ত্বে যে যে গুণের কথা লেখা আছে তা সম্পূর্ণ হলে তবেই সম্ভব। এখানে মনে রাখতে হবে যারা দীক্ষিত নয় তারা আংশিক সত্যধর্মী কারন সম্পূর্ণ রূপে সত্যধর্মাবলম্বী হইতে হইলে এ ধর্ম্মে দীক্ষিত হওয়া আবশ্যক। সুতরাং তারা অসম্পূর্ণ সত্যধর্ম্মাবলম্বী।
এখন তেমন একজনকে বিশ্বাস করতে হলে আগেই শিখতে হবে বিশ্বাস কিভাবে করতে হয়, গুরুদেব এই বিষয়ে কি বিধান দিয়েছেন, পৃথিবীতে বিশ্বাস নিয়ে এতো সুন্দর কেউ বোঝাতে পারেনি আর তোমরা তার ধার দিয়েও চলতে চাও না, আচ্ছা বলতো তোমরা কি সাধারণ মানুষ ? না দেবত্ব অর্জন করেছ ? কোনটা ? গুরুদেব এক জায়গায় বলেছেন সত্যধর্ম্ম প্রচারার্থে আর চিন্তার প্রয়োজন নেই, যে সকল মহাত্মারা ভারতে ঈশ্বর আর ঈশ্বরাবতার বলে পরিচিত তাঁরা জন্ম নেওয়ার জন্য সমুদ্যত হয়েছেন। তোমরা তাদেরকে শিক্ষা, গুরুভক্তি শিক্ষা দেবে, তাঁদের এটাই বাসনা। কারন তাঁরা ভক্তি গুণে একত্ব পান নি। আর যা পারো তাতেই যথেষ্ট। এখন বোঝো আমি কেন ঐ প্রশ্ন করলাম, ভক্তি প্রকৃত ভাবে কে শেখাবে ? কোন বয়স থেকে কিভাবে ভক্তি শিক্ষা করতে হয় তা একমাত্র আদিষ্ট ছাড়া এই বিষয়ে প্রকৃত জ্ঞান কেউ দিতে পারবেনা, তার উদাহরন হল সত্যধর্ম্মের বিশৃঙ্খলতা, বই পড়ে যদি ভক্তি শিক্ষা সম্ভব হতো তাহলে একত্বও পেত তা ত হয়নি, অর্থাৎ যদিও মহাত্মারা জন্মগ্রহণ করলেন তবুও গুরুবাক্য রক্ষন হোল না। আমি জানি কিভাবে ভক্তি শিক্ষা করতে হয় তার এক প্রকাশ স্বরূপ গুরু পূজার সময় আমরা গুরু বরণ করে থাকি। ধর্ম্ম জগতের গুহ্য বিষয়ে জ্ঞান গুরুমুখে জ্ঞাতব্য হতে হয়, তাহলে গুরুদেব না থাকলে কার কাছ থেকে জ্ঞাতব্য হবো ? এ ধর্ম্ম উৎকৃষ্ট তাই যদি ভেবে বসি শেষ নবীর পরে কিছু নেই তাহলে সম্পূর্ণ ভুল হবে।
অনন্ত অনন্ত অনন্ত এই হিসাবের প্রধান হিসাব রক্ষক পরম পিতা তাঁর পর মহাত্মা গুরুনাথ তাঁর পর যিনি আদিষ্ট হবেন তাঁর প্রতি বর্তাবে, আদিষ্ট চলে যাবে পুনঃরায় আদিষ্ট আসবে তাদের অবর্তমানে সত্যের প্রচার প্রসার সম্ভব নয়, কারন দীক্ষা না হলে সম্পূর্ণভাবে সত্য উপলব্ধি সম্ভব নয়, আর সাধনার প্রথম ধাপ সমদর্শন সাধনাও সম্ভব নয়। কারন গুরুদেব একজায়গায় বলেছেন সমদর্শনের নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে আর নিয়ম পালন করতে হবেনা, সমদর্শনের আগে যে নিয়মে চলতে তাহাই পালন কর। আবার তিনি বলেছেন সমদর্শনে স্থাপন করা হয়েছে চিন্তা নেই জন্মান্তরে পালনে সক্ষম হবে, তাহলে বোঝা গেল গুরুদেব বা আদিষ্ট সাধক ভিন্ন কেউ সমদর্শন সাধনায় স্থাপন করতে অক্ষম কারন যিনি জন্মান্তরের ভার নিয়েছেন দীক্ষার ( অভেদ ক্রিয়া ) মাধ্যমে তিনি ছাড়া আর কেউ এ কথা বলতে পারেন না যে তোমার চিন্তা নেই জন্মান্তরে সফল হতে পারবে। কোন শিষ্যের কি প্রয়োজন তা অভেদকারী ছাড়া কে বুঝবে ? কেউ না। আজকাল চারিদিকে মুড়ি মুড়কির মতো সমদর্শন করছে কেউ একবার কেউ দুইবার যা সম্পূর্ণ অসত্য। সময় থাকতে যদি কর্তব্য না করা হয় পরে অনেক কষ্ট পেতে হবে এ কথা প্রবাদ বাক্য গুরুদেব বলেছেন, তাই পরে গেলাম শুনে গেলাম তাতেই হবেনা, মানতে হবে সেই মানার জন্য যে উপায় তা গুরুদেব লিখেছেন তাকে বোঝার জন্যেও আমার আদিষ্টের কাছে তোমাদের আসতে হবে। যদিও সহজ তবুও সুকঠিন।
একটা চিরন্তন সত্য আছে আদিষ্ট চেনার সেই সর্বজনীন সত্যকে বলার আগে কয়েকটি কথা বলা প্রয়োজন সেটা আগে লিখছি, ঈশ্বর আদিষ্ট কেউ হয়েছে? কেন হয়েছে? তাতে আমার কি প্রয়োজন এসব চিন্তা কে আগে শান্ত করতে হবে নাহলে সেগুলো অসুবিধায় ফেলবে এবং রিপুরাজ ধৈর্য্য ধারণ পূর্ব্বক কার্য্য করতে দেবেননা। ঈশ্বর আদিষ্ট অর্থাৎ সৃষ্টির মূলে যে কারণের কারণ তাঁর থেকে এই পৃথিবীতে কেউ আদেশ পেয়েছেন যাতে করে পৃথিবীব্যাপী মানুষ কারনের কারণ কে জানতে পারে এবং জীবন স্বার্থক করতে পারে। আর যারা জীবন স্বার্থক করতে পারে না তারা অবশ্যই নিরর্থক জীবনযাপন করে, তাই আদিষ্ট কি তা জানা অবশ্যই কর্তব্য নাহলে বিষয়টা এরকম হবে তুমি সারাটা মাস কাজ করলে আর মাসের শেষে কিছুই ফল পেলেনা, কাজের যে কারণ আছে সেটাও জানা হল না।
এখন প্রশ্ন হতে পারে ঐ মানুষটা কেন আদিষ্ট হতে গেলেন, তার উত্তর এই, যে আত্মারা হাজার হাজার বছর আগে থেকে কারনের কারণকে খোঁজার চেষ্টা করছেন এবং যেহেতু আত্মার মৃত্যু হয়না তাই সদগুণাবলী জন্মান্তর আত্মাতে থেকে গেছে, সেই গুণের প্রভাবে সে জ্ঞান লাভ করেছেন যে এই পৃথিবীতে আসার কারন কি এবং কি বা কর্তব্য, সেই কারনে সৃষ্টির মূল সৃষ্টিকর্তা একজনকে দায়িত্ব দিয়ে থাকেন যদি সে কর্তব্য পালনে সক্ষম হতে পারেন, তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে সত্যধর্ম্মীদের প্রিয় গুরুদেব লিখেছেন এই দায়িত্ব পালনে মাত্র তিনটি আত্মাই সক্ষম, তাঁরা হলেন ঈশ্বর গুরুনাথ ঈশ্বর ভোলানাথ এবং ঈশ্বর কার্তিকেয়। আদিষ্ট সাধকের গুরুত্ব শুধু সত্যধর্ম্মের মুষ্টিমেয় কয়েকজন মানুষের নয় সারা পৃথিবীর তাই আমাদের সব জায়গায় বার্তা বয়ে নিয়ে যেতে হবে।
আদিষ্ট হয়েছে মানে তাঁর গুরুত্ব অপরিসীম তাই তাঁকে বিশ্বাস করা একমাত্র কাজ এবং তাঁর কথামত চলা উচিৎ কিন্তু তাঁকে বিশ্বাসই করতে পারছিনা যে এই ব্যাক্তি আমার কোনো সাহায্য করতে পারে এই সমস্যা মূল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারন আমাদের মধ্যে এই জ্ঞান নেই যে বিশ্বাস কি করে করতে হয় তাই মহাত্মা গুরুদেব শিক্ষার সাধারণ নিয়মে লিখেছেন তাতে বলেছেন কিভাবে ধাপে ধাপে একজন উন্নত আত্মাকে চেনা যাবে আর তাঁকে বিশ্বাস করে জীবন ধন্য করা যাবে। তাই আসুন আমরা তাঁর লেখনী পড়ে কার্য্য করি অসুবিধা হলে আদিষ্ট আছেন শিখিয়ে দেবেন। তিনি আমাদের সাহায্যের জন্য একটু একটু করে দিয়ে দিয়ে ঠিক মোটামাথা পরিস্কার করে দেবেন।
সাধারণ সম্পাদক
মানবেন্দ্র আচার্য্য
গুরুনাথ সত্যধর্ম্ম মহামণ্ডল কেন্দ্র।
0 মন্তব্যসমূহ