সত্যধর্ম্মে সাকার উপাসনা নাই।

 



    গুরুদেব বলিয়াছেন "কদাচ গুরুকে পরমপিতার তুল্য জ্ঞান করিবে না।" তিনি ইহা বহু জায়গায় সাবধান করিয়া গিয়াছেন। তিনি স্বশরীরে যখন ছিলেন তখন যেভাবে উৎসব পরিচালিত করিতেন তখন নিরাকার ভাব প্রত্যক্ষ করা যাইত কেননা তিনি বসিতেন আর সকলে তার পিছনে এবং দুই পাশে বসিয়া উপাসনা উৎসব করিতেন এনয় যে তিনি বসিতেন আর সকলে তাঁর মুখোমুখি বসিয়া উপাসনা করিতেন। তিনি ইহলোক ত্যাগ করিয়া যাওয়ার পর বেশ কয়েকটি উপাসনা ঐভাবেই হয় পরবর্তীতে সকলের একটাই কথা হইল গুরুদেব স্বশরীরে ছিলেন ঠিক ছিল কিন্তু এখন আমাদের পাসে নাই তাই গুরুদেবের ছবির ব্যাবস্থা করা হইল এবং সম্মূখে রাখিয়া উৎসব উপাসনা শুরু হইল।

 এই শুরু হইল সর্ব্বনাশ, যাঁহারা এই কাজটি করিল তাহাদের একবারটি মনে হইল না ইহা পরবর্তীতে কি সর্ব্বনাশ পাপের কাজ হইবে। কেননা সকলেই কিন্তু হিন্দু ধর্ম্ম হইতে আসিয়াছে কেননা তাহাদের অভ্যাস কল্পিত মূর্তির আরাধনা করা তাই তাহাদের নিরাকারের বিষয় মনে থাকিলেও বাহ্যিক বিষয় ছাড়িতে পারেনাই। তখন হইতেই এই অঘটন ঘটিতে ঘটিতে আজ দূর্ব্বিসহ পরিস্থিতি হইয়াছে।

১) সত্যধর্ম্মে প্রধান বিষয় সাকার উপাসনা নাই। তাহা হইলে কেন গুরুদের ছবি রাখিয়া উপাসনা উৎসব হইবে? কেননা গুরুদেব স্বশরীরে যেমন ভাবে হইত, কেন পরবর্তীতে ঐরূপ হইল না? এহাই প্রমান গুরুকে পরমপিতা করিবার।

২)  যেমন পরমপিতার গুণকীর্ত্তন কালে গুরুদেবকে আরতী করা এবং খুব ভালভাবে সাজানো এর অর্থ কি গুরুকে পরমপিতা করিবার।

৩) ঐরূপ ভাবে উপাসনা ও উৎসব হইলে দেখিয়া থাকিবেন বাহিরের লোক আসিয়া ঐ গুরুদের আসনে কিছু টাকা বা মিষ্টির প্যাকেট দিয়া যান ওনি ভাবেন এনরা সকলেই ঐ মহাত্মাগণের ভজনা করিতেছেন। ইহা ভাবিবার জন্য ঐ স্থানে যতজন থাকিবে সকলেরই পাপ হইবে। ঐরূপ ভাবিবার জন্য। ইহাই প্রমাণ।

৪) একজন বধির তিনি শুনিতে পান না বলিতে পারেনা তিনি ঐরূপ উপাসনা ও উৎসব প্রথম দেখিলে তিনি অবশ্যই ভাবিবেন যে এখানে সকলেই ঐ মহাত্মাগণের উপাসনা করিতেছেন এইরূপ ভাবিবার জন্য সকলের পাপ হইবে।

৫) এবার বলি গুরু পূজা। এখানে ভিশন ভাবে গুরুকে পরমপিতা বানান হইয়াছে যেমন কিছু বছর আগে একটি গান উদয় হয় বলা হইয়াছে এটি আত্মাকর্ষণ উপায় দ্বারা প্রাপ্ত ইহা বড় কথা নহে গানটির বিষয়বস্তু কি? 

  সর্ব্বসিদ্ধি শান্তিদাতা জগৎগুরু গুরুনাথের জয় জয় জয়।
   শন্তিদাতা সুখদাতা দুঃখহারী গুরুনাথের জয় জয় জয়।।

অর্থ=  সর্ব্বসিদ্ধ প্রদান করিতে পারেন একমাত্র পরমপিতা পরমেশ্ব। গুরু শুধু সাহায্য কারি কিন্তু সিদ্ধি সৃষ্টি কারি নহেন। একমাত্র শন্তিদাতা পরমপিতা। গুরু সাহায্য কারী। জগৎগুরু একমাত্র পরমপিতা পরমেশ্বর। গুরুদেব গুরুতত্ত্বে লিখিয়াছেন "গুরুকে পরমা ভক্তি করিবে নতুবা জগৎগুরু জগদীশ্বরের ভক্তি করা অসাধ্য।" আর গুরুদেব কোথাও লিখিয়া রাখে নাই যে গুরু জগৎগুরু সুতরাং গুরু জগৎগুরু হইতে পারে না। গুরুনাথ = এখানে গুরু অর্থ মূখ্য আর নাথ অর্থ কর্তা অতএব মূখ্যকর্তা সুতরাং পরমপিতার আর এক নাম গুরুনাথ। জয় জয় জয় তিনবার জযধ্বনী দেওয়া মানে তিনি সৃষ্টি স্থিতি ও লয়। আর শেষের জযধ্বনী স্থূল সূক্ষ্ম ও কারণ।

 এতেই প্রমান এই সঙ্গীত পরমপিতার ইহা গুরু গুণকীর্তন নহে উহা গুরুদেবের সম্মূখ্যে গাহিলে গুরুদেবকে পরমপিতা করা হয়কি না?

    এইরূপ পাপ চলিতে পারে না। অজ্ঞানতায় বশীভূত হইয়া বিকট পাপের অন্ধকারে সকলকে ঠেলিতে পারে না। সত্যধর্ম্ম জ্ঞানের ও প্রেমের ধর্ম্ম সুতরাং আমাদের সচেতন হইয়া কার্য্য করিতে হইবে। আর এই রূপ অচিরেই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ