দেবদেবী দর্শন লাভ করিতে বাসনা হয়? কিভাবে অনায়াসে সম্ভব হয়।
কল্পনা মাত্রই মিথ্যা, ইহা সকলেই অবগত আছে তবুও মিথ্যাকে অবলম্বন করিয়া সত্যকে জানিতে চায়, কিন্তু ইহা তো সম্ভবপর নহে। সত্য উপলব্ধি করিতে হইলে সত্যে একনিষ্ঠ হইতে হইবে তাহা হইলেই আবিষ্কার সম্ভব।
জগতে হেরি দুই প্রকার।
কেহ দেবে মানে সাকার জ্ঞানে
অন্যে বলে ব্রহ্মসার।
জগতে দুই প্রকার চিন্তার মানুষ দেখা যায়। কেহ দেবদেবীকে সাকার রূপি পরমপিতা জ্ঞান করে আর এক প্রকার লোক পরমপিতা নিরাকার জ্ঞানে মানে।
গুরুদেব বলিতেছেন
দেব দেবী আছেন সত্য, ব্রহ্ম হন পরম সত্য,
মিথ্যা দ্বন্দ্ব তোদের সত্য, বুঝবি কি আর মরম আর।
দেব দেবী আছেন সত্য কিন্তু কল্পনা মাত্র যে মিথ্যা ইহা ভুলিয়া তাঁহাদের মিথ্যারূপ কল্পিত মূর্তি বানাইয়া পূজা করিতেছে যে তৈরি করিয়াছে ও যে তৈরি করিতে দিয়াছেন কেহই দেখেন নাই তথাপি মিথ্যাকে অবলম্বন করিয়া পূজা করিতেছে। আরও মিথ্যা এই যে যাহার জন্ম, স্থিতি ও মৃত্যু তিন বর্তমান সেই দেব দেবীকে পরমপিতা জ্ঞানে পূজা করিতেছে ও বলিতেছে তিনিই সৃষ্টি কর্তা। তাই গুরুদেব বলিতেছেন তোদের ব্যাখ্যা মিথ্যা তা নিয়া দ্বন্দ্ব করিয়া লাভ নাই। তোরা সত্যের উৎস বুঝবি কি করিয়া।
তাই বলিতেছেন-
যদি চাও বুঝিতে সত্য, উপাসনা কর নিত্য,
সত্যধর্ম্ম বিনা তত্ত্ব, বুঝায় হেন সাধ্য কার?
যদি প্রকৃত সত্য বুঝিতে চাও সত্যের নিয়মে চলিলে অচিরেই কার্য্য সিদ্ধি হইবে।
গুরুদেব বলিতেছেন
তুমি অন্ধ অন্ধ সনে, বিবাদ কর কি কারণে,
সত্যধর্ম্ম আঁখি বিনে এ ভাব বোঝা, বোঝা সার।।
একে তো তুমি অন্ধ কেননা মিথ্যাকে অবলম্বন করিয়া আছ আরও একজন অন্ধকে পথের সন্ধান দিতেছ? তা নিয়া বিবাদে কেন করিতেছ যে কোনটা সত্য আর কোনটা অসত্য। আগে নিজের দিকে তাকাও। এই সত্য বুঝিতে হইলে সত্য অবলম্বনে কার্য্য কর নিশ্চয়ই ফল প্রাপ্ত হইবে।
যাহারা কল্পনাকে সম্বল করিয়া সত্যের কথা বলে তাহাদের উদ্দেশ্যে গুরুদেব লিখিয়াছেন যে, নিরাশার কি আশার কথা, মাথা নাই তার মাথাব্যথা," তাই বলিতেছেন "তাই শুন সার কথা, নিরাশ হওনা জীবনে।" সত্য বুঝিতে হইলে কল্পনাকে পরিত্যাগ পূর্ব্বক নিরাকার অদ্বিতীয় পরমপিতা পরমেশ্বরের উপাসনায় নিমগ্ন হইলেই প্রকৃত ভাবে উন্নত মাহাত্মাদের দর্শন সম্ভব।
0 মন্তব্যসমূহ