🔆 সত্যধর্ম্মে সাকার উপাসনা নাই। 🔆
সত্যধর্ম্মের মূল স্তম্ভ চারিটি। তাহার মধ্যে প্রথম স্তম্ভ সাকার উপাসনা নাই। গুরুদেব যে সত্য প্রচারের সূত্র দিয়া গিয়াছেন তাহার উপর আঘাত হানা হইয়াছে, ইহা শুরু হইয়াছিল গুরুদেব পরলোক গমনের পর হইতে। গুরুদেব যখন স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন তখন কি গুরুদেব বসিতেন আর তাহার মুখোমুখী বসিয়া সকলে উপাসনা করিতেন? নিশ্চয়ই না। তাহা হইলে এই অবৈজ্ঞানিক অবস্থায় উপনীত হইতে হইল কেন?
গুরুদেব যে ধর্ম্মের বার্তা দিয়াছেন তাহা "সত্য", কিন্তু আজ গুরুদেবের আদর্শকে চূর্ণবিচূর্ণ করার প্রক্রিয়ায় মাতিয়াছে। ইহা হইতে পারে না। "মিথ্যা মাত্র পাপ স্পর্শ হয় জানিবে" ইহা সকলে কি ভুলিয়া গিয়াছেন? আজ ইহার জন্য লিখিতে হইতেছে, নিজেকে বড় লজ্জিত বোধ করিতেছি। কেননা গুরুদেব লিখিয়াছেন, "সুদিন আগত হ'ল এখনো জাগনা কেন? পাইতে মুকুতি তরী কেন এত অযতন?" সত্যই আমরা অযত্ন করিতেছি, এখনও কি জাগিবো না, সত্য সম্মূখে থাকা সত্ত্বেও? সত্যধর্ম্মের আদর্শকে এই ভাবে জলাঞ্জলী কেন দেওয়া হইবে? "উপপতিরতা প্রায় উপধর্ম্ম পাপময় ধর্ম্মবোধে অধর্ম্মেতে সাধু নাহি রত হয়....." কিন্তু যাহারা এই অপ্রীতিকর অজ্ঞানতা বসত কার্য্য করিতেছে, তাহারা একবারটি ভাবুন সত্য আদর্শের কথা। সেই দিকেই ধাবিত হইলে প্রকৃত সত্য প্রচারে বিঘ্নিত হইবে। "কাপড়লহ শুকাইয়ে। নৈলে শীতের দিনে ভিজে কাপড়ে বড়ই জ্বল্'বে জ্বালা স'য়ে।" আজ জ্বালা সইতে হইতেছে, ইহা কেবল আমারই হইতেছে ইহা নহে, গুরুদেবেরও হইতেছে।
চারিদিক হইতে সত্যের ছায়াতলে যখন হইতে আসিতেছিল, তাহারা সকলেই প্রায় কল্পিত ছবি মূর্তি সম্মূখে রাখিয়া তাঁহাকে ঐ দেব-দেবী জ্ঞানে পূজা ও সৃষ্টি কর্তা এবং গুরুকেও ঐরূপ আসনে বসাইবার অভ্যাসে আসিন ছিল। অতএব তাঁহাদের মধ্য হইতে ঐরূপ বিকৃত অবস্থা দূরিভূত না হইবার কারণে এই অধঃপতন হইয়াছে। তাই তো গুরুদেব বলিয়াছেন "জগতে হেরি দুই প্রকার। কেহ দেবে মানে সাকার জ্ঞানে অন্যে বলে ব্রহ্মসার। দেব দেবী আছেন সত্য, ব্রহ্ম হন পরম সত্য, মিথ্যা দ্বন্দ্ব তোদের সত্য, বুঝবি কি আর মরম আর। যদি চাও বুঝিতে সত্য, উপাসনা কর নিত্য, সত্যধর্ম্ম বিনা তত্ত্ব, বুঝায় হেন সাধ্য কার? ..." আর আমরা কি করিয়া সকলকে বুঝাইবো? আমরাই যদি গলদ করিয়া বসি। কেননা কেহ যদি দেখে গুরুদেবের ছবিটি সম্মূখে রাখিয়া উপাসনা হইতেছে, তাহা হইলে তাহার মধ্যে প্রথমেই উপস্থিত হইবে ঐ মহাত্মার আরাধনা বা উপাসনা হইতেছে, আর বধির হইলে তো কথাই নাই। ইহারই জন্য অপরাধী তো হইতেই হইবে।
প্রণব রাখিয়া উপাসনা করিলে এই অপরাধ হইবে না, কেননা উহাদের ভাবিতে হইবেই যে, ইহারা ঐ লেখনির উপাসনা করিতেছে। ইহা তো সত্য আমরা উঁহারই উপাসনা করিতেছি, কেননা উঁহার অর্থ অনন্ত অনন্ত অনন্ত গুণময় পরমেশ্বর। সুতরাং আমাদের ঐরূপ পাপে লিপ্ত হইতে হইবে না।
হ্যাঁ ইহা সত্য যে ঐ প্রণবটিও অক্ষরবর্ণ সাকার রূপ অবস্থা না থাকিলেও চলিবে। ইহা কেবল বড় উৎসবে অথবা ছোট অনুষ্ঠানে ক্ষণস্থায়ী দিক নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে রাখিতে পারি। ইহাতে সত্যের ভিত আরও মজবুত হইতেছে এবং সমাজে নতুন উন্মেষ ঘটিবে।
কেহ কেহ বলিবেন মহাত্মা নিবারণ এই কার্য্য করিয়াছেন। তিনি আদিষ্ট ও ব্রহ্মদর্শী হওয়ার কারণে ভুল করিতে পারেন না। একবারটি ইতিহাসের দিকে দেখিবেন, অবস্থা পরিষ্কার হইবে। মহাত্মা নিবারণের কথা কেহ শোনেন নাই। তাঁহাকে লাঞ্ছিত, অপবাদ, অপমানিত হইতে হইত প্রতি মূহুর্তে। সেই সময় সৎ-সতীর সংখ্যা কম ছিল, যাহা ছিল তাহাদেরকে এক রাখিতে অনেক অন্যায় মানিয়া লইতে হইয়া ছিল। তাহা না হইলে প্রচারে বিঘ্ন হইত। যাঁহারা গুরুদেবের উপর বিতরাগ হইয়া ছিল, গুরুদেব পরলোকগত হইবার পর তাঁহাদের সাদরে ডাকিয়া লইয়া একত্রিত করিয়া ছিলেন। তাঁহারাই আবার মহাত্মা নিবারণকে না ডাকিয়া কমিটি গঠন করিয়া উৎসব পরিচালনা করিয়াছিলেন। ইহাতে নিশ্চয়ই বুঝিতে পারিবেন তাঁহার কেমন যন্ত্রণার মধ্য দিয়া চলিতে হইত। তিনি যদি কঠোর হইতেন তাহা হইলে তখনই বিভাজন হইতো, ইহা যাহাতে না হয়, ইহার জন্য বহু অন্যায় মানিয়া লইয়া ছিলেন।
আসুন সকলে মিলিয়া সত্যধর্ম্মের নিরাকারত্ব গুণের আদর্শকে জনসমাজে উন্মোচিত করি।
-আদিষ্ট নিরুপম
কেহ কেহ বলিবেন মহাত্মা নিবারণ এই কার্য্য করিয়াছেন। তিনি আদিষ্ট ও ব্রহ্মদর্শী হওয়ার কারণে ভুল করিতে পারেন না। একবারটি ইতিহাসের দিকে দেখিবেন, অবস্থা পরিষ্কার হইবে। মহাত্মা নিবারণের কথা কেহ শোনেন নাই। তাঁহাকে লাঞ্ছিত, অপবাদ, অপমানিত হইতে হইত প্রতি মূহুর্তে। সেই সময় সৎ-সতীর সংখ্যা কম ছিল, যাহা ছিল তাহাদেরকে এক রাখিতে অনেক অন্যায় মানিয়া লইতে হইয়া ছিল। তাহা না হইলে প্রচারে বিঘ্ন হইত। যাঁহারা গুরুদেবের উপর বিতরাগ হইয়া ছিল, গুরুদেব পরলোকগত হইবার পর তাঁহাদের সাদরে ডাকিয়া লইয়া একত্রিত করিয়া ছিলেন। তাঁহারাই আবার মহাত্মা নিবারণকে না ডাকিয়া কমিটি গঠন করিয়া উৎসব পরিচালনা করিয়াছিলেন। ইহাতে নিশ্চয়ই বুঝিতে পারিবেন তাঁহার কেমন যন্ত্রণার মধ্য দিয়া চলিতে হইত। তিনি যদি কঠোর হইতেন তাহা হইলে তখনই বিভাজন হইতো, ইহা যাহাতে না হয়, ইহার জন্য বহু অন্যায় মানিয়া লইয়া ছিলেন।
আসুন সকলে মিলিয়া সত্যধর্ম্মের নিরাকারত্ব গুণের আদর্শকে জনসমাজে উন্মোচিত করি।
-আদিষ্ট নিরুপম
