তিথির গুরুত্বে গুরু
পরলোকে সকল আত্মা সমান স্থানে অবস্থিত করেন না। বস্তুতঃও তাই। যাঁহারা উন্নত, তাঁহারা উচ্চতর ও সুখময় স্থানে ও যাহারা অবনত, তাঁহারা নিম্নতর ও ক্লেশময় স্থানে বাস করেন। সূর্য্য মণ্ডলের ও পৃথিবীর কেন্দ্র সংযোজক রেখার মধ্যবিন্দু হইতে দ্রাঘিমা ও অক্ষাংশরূপে রেখাপাত করিয়া উচ্চতা ও নিম্নতা স্থির করিতে হইবে। -সত্যধর্ম্ম ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ। এই স্থানে দুইটী বিষয় লক্ষণীয়, একটী বিষয় পরলোক ও ইহলোক নির্ধারণ, এবং দেবদেবী গণের অস্তিত্ব, কেননা প্রাচীন কাল হইতেই দেবদেবী গণের জন্ম ও মৃত্যু তিথি প্রধান করিয়াই হইত। কেননা কল্পনার পাহাড় এটাই বিকট যে দেবদেবী গণের অস্তিত্ব তাঁহাদের জন্ম ও মৃত্যু বর্তমান থাকিয়াও তাঁহাদের উচ্চতর স্থানে বসাইতে গিয়া পরমপিতা পরমেশ্বরের আসনে বসাইয়া সত্যকে বিপর্যয় করিয়া তুলিয়াছে। বিষয়ান্তরের ব্যাঘাত জনিত কারণে ক্ষান্ত হইলাম। বিশেষ জ্ঞান সহকারে দৃষ্টিপাত করিলে দেখিতে পাই স্বর্গ ও নরক কি? তাহার পরিচয় বর্তমান প্রর্দশিত হইল। ইহা নিয়াও বিভ্রান্তি বর্তমান। গুণ অনুসারে উচ্চতা ও নিম্নতা নির্ধারণ হইয়াছে এবং তাহা সত্য উপস্থাপন দ্বারা।
পৃথিবী ও সূর্য্যের অবস্থানে উচ্চতা-নিম্নতা স্তর। ঐ স্তর হইতেই গ্রহ ও নক্ষত্রের অবস্থান অনুপাতে জন্ম ও মৃত্যু সংগঠিত হইয়া থাকে।
পৃথিবী ও সূর্য্যের অবস্থানে উচ্চতা-নিম্নতা স্তর। ঐ স্তর হইতেই গ্রহ ও নক্ষত্রের অবস্থান অনুপাতে জন্ম ও মৃত্যু সংগঠিত হইয়া থাকে।
শ্রাদ্ধ কার্য্য মৃত তিথিতে করাই সর্ব্বাপেক্ষা প্রশস্ত। মৃত্যু দিবসে করাও অযৌক্তিক নহে। তবে ইহা অবশ্য বক্তব্য যে, বৎসরান্তে ঐরূপ করা ভিন্ন প্রতি অমাবস্যায়ও করা বিধেয়। অধিক অর্থ ব্যয় বৎসরের মধ্যে একদিন করাই যুক্তিযুক্ত বটে, কিন্তু প্রকৃত কার্য্য প্রতি মাসে প্রতি অমাবস্যায় করাই কর্ত্তব্য। -ঈশ্বর গুরুনাথ।
এ স্থানে শ্রাদ্ধ বিষয় বলিয়াছেন বলিয়াই তিথির গুরুত্ব এ স্থানেই প্রধান এ নহে। গুরুদেব যথা স্থানে যেই রূপ বাক্যের প্রয়োজন এবং উহার প্রয়োজনিয়তার উপর গুরুত্ব দিয়াছেন। জন্ম ও মৃত্যু দুই বিষয়ের অবস্থান তিথির গুরুত্ব প্রধান কারণ যে সময় জন্ম হইল সেই মূহূর্তে গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থান যেই যেই স্থানে থাকে পুনরায় গ্রহের অবস্থান এক বৎসর পর সেই অবস্থানে তারিখ একই থাকেনা কিন্তু তিথি একই অবস্থানে থাকে অতএব তিথিকে প্রাধান্য দিবার প্রয়োজন অধিক।
প্রায় সমস্ত শুভ অনুষ্ঠান পূর্ব্ব পূর্ব্ব যুগ হইতেই তিথির গুরুত্ব অধিক হইয়াছে। বিভিন্ন পূজা পার্বণে আমরা এখনও দেখিতে পাই তিথি
অনুরূপ নানান অনুষ্ঠান হইয়া থাকে।
গুরুদেব নির্ধারিত যে পাঁচটি উৎসব আছে তাহাও তিথি নির্ধারণে। অতএব আমাদের তিথিকে গুরুত্ব দেয়া একান্ত কর্তব্য।
