উপবাস কি ? উপবাস করিলে কি হয় ? প্রকৃত পক্ষে কি ?



                      🌻  উপবাস 🌻

         ধর্ম্মার্থী প্রয়োজন অনুসারে উপবাস করিবেন। কিন্তু উপবাস করিলেই যে ধর্ম্ম হয়, কখনও এরূপ চিন্তা করিবেন না। এ বিষয়ে শাস্ত্রকারদিগের মত এই-

          উপাবৃত্তস্য পাপেভ্যো যস্তু বাসো গুণৈঃ সহ।
          উপবাসঃ স বিজ্ঞেয়ো ন শরীর বিশোষণম্।।

     অর্থাৎ পাপসমূহ হইতে উপাবৃত্ত (প্রতিনিবৃত্ত) হইয়া গুণসমূহের সহিত যে বাস, তাহাকে উপবাস বলিয়া জানিবে কিন্তু শরীর শোষণকে উপবাস বলিয়া জানিবে না।
                                      -ধর্ম্মার্থীর কর্ত্তব্য।

      উপাস্যকে আত্মার আভরণ করাকে উপাসনা কহে। সেই পরমপিতা পরমেশ্বরের গুণকীর্ত্তন সর্ব্বসময় করিয়া করিয়া হৃদয়ে স্থাপন করিতে পারাই উপবাস অর্থাৎ সঙ্কল্প রুঢ় হইয়া উপাস্যকে আত্মায় আবদ্ধ করাইতে পারিলেই উপবাস হয়।

       গুণকীর্ত্তন একটী মহাযজ্ঞ। সঙ্কল্পই এই যজ্ঞের বেদী, নিরন্তর যত্ন ই ইহার মহান্ অগ্নি, উৎসাহ ঐ অগ্নির সন্দীপক মাতরিশ্বা, পাপ ইহার সমিধ, দোষরাশি ইহার হবিঃ, জীবাত্মা ইহার হোতা এবং মোক্ষই ইহর ফল। -উপাসনা গ্রন্থ।

     এই নিয়মে উপাসনা করিতে পারিলেই প্রকৃত উপবাসে থাকিতে পারি এবং অনায়াসে ফল প্রাপ্তিতে আত্মহারা হইতে পারি। সুতরাং সারাদিন অনাহারে কাটাইয়া ধর্ম্মের কিছুই হয়না। হ্যাঁ অনাহারে কাটাইবার দরূন শরীর শোষণ হয়। তাহাতে শরীরের কিছুটা উপকার হয় বটে কিন্তু আত্মোন্নতীর কিছুই হয় না।