প্রকৃত ধর্ম্মের অবস্থান কি হইতে পারে?



   ধর্ম্ম অর্থাৎ পথ অতএব সৎ গুণ অবলম্বন পূর্ব্বক উন্নতির পথে চলিবার নামই সত্যধর্ম্ম।

   গুণ নিরাকার তাহা দেখা যায় না, ধরা যায় না, স্পর্শানুভব করা যায় না। একমাত্র অনুভূতি দ্বারাই প্রকাশ্যমান এবং গুণের শক্তি ও ব্যাপ্তি  আমরা বুঝতে পারি যেমন প্রেম, ভক্তি, একাগ্রতা এইরূপ অনন্ত অনন্ত অনন্ত প্রকার গুণ দৃশ্যমান। অতএব বহু গুণ সমষ্টি মিলিত হইলেই একটী বস্তু পদার্থের উদ্ভব হয় সুতরাং বস্তু যেমন ধরা যায়, দেখা যায়, স্পর্শ করা যায় তেমনই সৃষ্ট জীব মনুষ্য, তিনি একমাত্র গুণে উন্নতি করিতে পারেন, তাঁহাকে সৃষ্টি কর্তা বলিতে পারি না কেননা তিনিও সীমার মধ্যে আছেন। সৃষ্টিকর্তা একমাত্র অসীম। সৃষ্ট জগতে কোনও আত্মাই অনন্ত গুণী হইতে পারে নাই ও হইতেও পারিবে না সুতরাং অনন্ত অনন্ত অনন্ত গুণী হওয়া বলা একমাত্র পরিহাস তুল্য মাত্র। 

      খ্রীষ্টীয়-ধর্ম্ম। -এই ধর্ম্মে পরমপিতার সহিত পুত্র ও পবিত্র আত্মার অভেদ-ভাব কল্পিত হইয়াছে। কিন্তু ইতঃপূর্ব্বে প্রদর্শিত হইয়াছে যে, তাহা কখনও হইতে পারে না। অপর, এই ধর্ম্ম সূক্ষ্ম-জ্ঞানের বিষয় কিছুই উল্লেখিত নাই, এই দুই কারণবশতঃ প্রচলিত খ্রীষ্টীয়-ধর্ম্ম ঐকদেশিক । -সত্যধর্ম্ম প্রথম পরিচ্ছেদ। 


       মহম্মদীয়-ধর্ম্ম। -এই ধর্ম্মেও খ্রীষ্টীয়-ধর্ম্মের ন্যায় ঐকদেশীকতা দৃষ্ট হয়, অধিকন্তু বিধর্ম্মীদিগের প্রাণনাশে ধর্ম্মলাভ প্রভৃতি কতকগুলি আসুরিক নিয়মও প্রচলিত আছে, সুতরাং ইহাকে সত্য বলা যায় না।

      হিংসা বিদ্বেষ পাশের কারণ, তাহা ধর্ম্ম হইতে পারে না। ধর্ম্মের কাজ মনুষ্যকে দেবত্বে পরিনত করা এবং দেবত্বকে ঈশ্বরত্বে পরিনত করাই মূল উদ্দেশ্য (ঈবলিতে অনন্ত গুণের মধ্যে কোনও একটী গুণে পরমপিতার অনন্তভাব প্রাপ্ত বুঝায়)।

     ঐকদেশীকতা বলিতে এক ভাবাপন্ন কল্পনায় আবদ্ধ যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, মহম্মদীয়-ধর্ম্ম ইত্যাদি ইত্যাদি ধর্ম্মের কথা বলা হইয়াছে।