ক্রোধের পরিনাম।


 যে ক্রোধ-প্রভাবে মানব মানবত্ব-বিচ্যুত হইয়া পশুত্ব, সময়ে সময়ে পশুত্ব অপেক্ষাও নিকৃষ্টত্ব প্রাপ্ত হয়; যে ক্রোধ প্রজাকুলের উন্মলনের প্রধান হেতু; যে ক্রোধে প্রমত্ত ব্যাক্তির বাচ্যাবাচ্য ও কর্ত্তব্যাকর্ত্তব্য জ্ঞান থাকে না, বলিয়া সে গুরুজনের প্রতিও কর্কশ ভাষা প্রয়োগ করে, অবধ্যকেও বধ করে, এমন কি কখনও কখনও আপনাকেও যমালয়ে প্রেরণ করে, সুতরাং সে না করিতে পারে, এমন পাপ নাই; যে ক্রোধে উন্মত্ত ব্যক্তির মূখের কালিমা, চক্ষুর রক্তিমা, অধর কম্পন, নাসিকারন্ধ্রের বিস্ফারণ ও নিরন্তর শ্বাস-পতন হইতে থাকে এবং তাহাতে তাহার বিকট আকার উপস্থিত হয়; যে ক্রোধ-মদে মত্ত, হইলে চিত্ত-করী ধৈর্য্য-শৃঙ্খল আর পদে ধারণ করে না, বিনয়-অঙ্কুশাঘাত আর গ্রাহ্য করে না, প্রত্যুত লজ্জা-রজ্জুচ্ছেদন ও গভীর কলঙ্ক-পঙ্কের শঙ্কা পারিহার পূর্ব্বক বিকৃতভাবে দুষ্কৃত-হ্রদে ধাবিত হয়; যে ক্রোধে নিরন্তর আক্রান্ত জনের পরিণামে নাসিকা, হৃৎপিণ্ড ও পাকস্থলী হইতে রক্তস্রাব, রক্ত-বমন ও উন্মাদ-মুর্চ্ছা প্রভৃতি রোগ হইয়া থাকে; যে ক্রোধের প্রথমা-বস্থায়ও অজীর্ণ ও শিরঃপীড়ার উৎপত্তি হয় এবং যে ক্রোধ-সর্ব্বদেশীয় শাস্ত্রকারগণ কর্ত্তৃক সুদুর্জ্জয় রিপু বলিয়া উল্লিখিত হইয়াছে, সেই ক্রোধ--সেই অশেষ দোষাকর ক্রোধ আবার তেজঃ ও ন্যায়পরতা গুণের নিদান।